রুবেল মজুমদার ।। ঈদের আর মাত্র চার দিন বাকী আছে। ইতিমধ্যে কুমিল্লা জেলা সদরসহ জেলার বিভিন্ন হাটে আসতে শুরু করেছে কোরবানির গরু ছাগল সহ অন্যান্য পশু। এরই মধ্যে জমেও উঠতে শুরু করেছে। কোরবানীর পশুর হাটকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হয়ে উঠছে মৌসুমী দালাল ও ছিনতাইকারীরা। এ বিষয়ে বাজার কর্তৃপক্ষ প্রশাসনকে দৃষ্টি রাখার আহবান জানিয়েছেন।
এ দিকে ব্যবসায়ীরা আশা করেছেন, সোমবার থেকে কোরবানির পশুতে পুরোপুরি ভরে উঠবে কুমিল্লা নগরীসহ জেলার ১৭ উপজেলার ৪৩০ টি কোরবানির পশুর হাটে। এখন ক্রেতা বিক্রেতারা রয়েছে শেষ মুহুর্তের ব্যস্ততার মধ্যে।
গতকাল শুক্রবার (২৩ জুন) দুপুরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাড়কের পাশে এ হাটে বিভিন্ন যানবাহনে করে স্থানীয় ও দূর দূরান্ত থেকে খামারি ও গরু ব্যবসায়ীরা গরু, খাসি, ছাগল, ভেড়া নিয়ে ভিড় জমাতে শুরু করেন। এ হাটে ক্রেতা বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে জমে উঠেছে কুরবানী পশুর হাট।
কথা হয় জেলা সদর দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব জোড়কানন থেকে ছাগল কিনতে আসা আমিন সরকারের সাথে। তিনি বলেন, কোরবানি পশু হিসেবে এবার ছাগলকে বেছে নিয়েছেন তিনি । অন্যন্যা বছরের চাইতে এবার দামও বেশি মনে হচ্ছে । সাধ্যের মধ্যে পেলে একটা ছাগল ক্রয় করবো। বেপারীরা ছাগলের দাম বেশি চাচ্ছে বলে জানান তিনি।
গরু কিনতে আসা জেলার চৌদ্দগ্রামের মাইনুল বলেন, ৫ ভাগে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার মধ্যে একটি গরু কোরবানি দিবো। এ কারণে তারা এই দামের মধ্যে ভালো একটি গরু খুঁজছে। তবে দাম বেশি হওয়ায় কিছুটা চিন্তিত্ব মনে হচ্ছে তাদের।
সুয়াগাজী বাজারে গরু বিক্রি করতে আসা ক্ষুদ্র খামারি আহসান হাবিব বলেন, ‘শখের বসে তিন মাসের মোটাতাজাকরণ প্রজেক্টে তিনি দশটি গরু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করে হাটে এনেছি। গো খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় এবার লাভ খুব একটা হবে না বলে জানান তিনি।
এদিকে, কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, কুমিল্লা জেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে এবছর ৪৩০ টি কোরবানির পশুর হাট ইজারা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী পশুর হাট ৩৬ টি। অস্থায়ী পশুরহাট ৩৯৪ টি। সবচেয়ে বেশি পশুর হাট বসবে মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় চল্লিশটি করে। আর সবচেয়ে কম বসবে মেঘনা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলায়।
কুমিল্লা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান জানান, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কোথাও পশুর হাট বসানো যাবে না। ব্যবসায়ীদের কোন হাটে আসতে বাধ্য করা যাবে না। সমগ্র জেলায় হাটগুলোর উপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নজরদারি থাকবে। এছাড়া হাসিলের হার উন্মুক্ত অবস্থায় হাটে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। ইজারাদাররা পশুর হাটে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট থাকবেন।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, প্রতিটি হাটে জেলা প্রশাসনের একটি টিমের মাধ্যমে কোরবানির পশুর হাটে সরকারি হাসিলের মূল্য তালিকা প্রকাশ্যে টানিয়ে দেয়া হবে। এছাড়া হাটের পরিষ্কার পরিছন্নতা, ভেটেরিনারি চিকিৎসক বসা ও জাল টাকা সনাক্তকরণ মেশিন ব্যবস্থাপনায় কাজ করবে ইজারাদাররা।