শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
Space Advertisement
Space For advertisement
  • প্রচ্ছদ » লিড নিউজ ১ » দাম বেশী হওয়ায় অস্বস্ততি ক্রেতারা কুমিল্লায় শেষ সময়ে জমে উঠেছে পশুর হাট, সক্রিয় অনলাইন পশুর হাটও


দাম বেশী হওয়ায় অস্বস্ততি ক্রেতারা কুমিল্লায় শেষ সময়ে জমে উঠেছে পশুর হাট, সক্রিয় অনলাইন পশুর হাটও


আমাদের কুমিল্লা .কম :
27.06.2023

জাহিদ হাসান নাইম ।। কুরবানীর ঈদের আর বাকী মাত্র ২ দিন। আসন্ন এই কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কুমিল্লা জেলার খামারি, মৌসুমী ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। সক্রিয় রয়েছে অনলাইনের পশুর হাটও। গত বছরের তুলনায় এবার কোরবানীর পশুর দাম কিছুটা বেশী হওয়ায় বেশ অস্তস্তিতে রয়েছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা এটা স্বীকার করে বলেন, গো-খাদ্যের দাম বাড়ার কারণেই গরুর দাম কিছুটা বেশী।
কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, খামারিরা হাটে গরু নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষা করছেন আর ক্রেতারা হেঁটে হেঁটে পছন্দের পশু খুঁজে চলছেন।
এসময় কথা হয়, কুমিল্লার লাকসামের খামারি জসিম মিয়ার সাথে। জসিম মিয়া জানান, এ বছর ২০ টি গরু বাজারে নামিয়েছি। তার মধ্যে ১০ টি বিক্রি করতে পারছি। বাকী ১০ টি বিক্রি করার অপেক্ষা করছি। কাস্টমার এসে দেখে যাচ্ছে। আমাদের আর কাস্টমারের দামের মধ্যে বিশাল গ্যাপ। তাই বিক্রি করতে পারছি না। আশা করি ঈদের আগে সবগুলো গরু বিক্রি করতে পারবো।
এছাড়া, লালমাই উপজেলার ভূশ্চি গরু বাজারে গরু কিনতে আসা মোতালেব মিয়া বলেন, এ বছর গরুর অনেক দাম। আগের তুলনায় অনেক বেশী। যার কারণে, পছন্দ হলেও কিনার উপায় নাই। ঈদেরও আর বেশীদিন নাই। কুরবানীর জন্য পশু তো কিনতে হবেই। দেখা যাক, ভাগ্যে কি আছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, কুমিল্ল¬া জেলায় এবার স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে এ বছর অন্তত ৪৩০টি কোরবানির পশুর হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী পশুর হাট ৩৬টি, অস্থায়ী ৩৯৪টি। সবচেয়ে বেশি পশুর হাট বসবে মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় ৪০টি করে, এছাড়া চৌদ্দগ্রামে বসবে ৩৫টি। এছাড়াও অনলাইনেও বিভিন্ন প্ল¬াটফর্মে চলছে পশু বেচা কেনা।
এছাড়াও বিভিন্ন খামারে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতারা পছন্দের পশু কিনতে খামারে ভিড় করছেন। প্রচন্ড গরমে গরু বাজারে ভীড় না করে অনলাইন এবং খামারমুখী হচ্ছেন ক্রেতারা। ব্যক্তি উদ্যোগে এবং খামারসহ বিভিন্ন অনলাইন ফেসবুক প্লাটফর্মে কোরবানির পশু কেনাবেচা কাজ শুরু করেছে। অনেকে পশু ক্রয় করে খামারে রেখে যাচ্ছেন। অনেকে দরদাম করে পশু কিনে নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন।
কুমিল্লা জেলার সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাট বসে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশানি বাজারে। এছাড়াও, কুমিল্ল¬া নগরীর নেউড়া, লাকসাম গরুবাজার, লালমাইয়ে ভূশ্চি গরুবাজার, যুক্তিখোলা বাজার, ফুলগাঁও বাজার, গৈয়ারভাঙ্গা বাজার সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। এছাড়াও, জেলার বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী গরুবাজারও গড়ে উঠেছে। শেষ সময়ে পুরো দমে কেনা বেচা শুরু হয়েছে বলেও জানান খামারিরা।

লালমাইয়ের ভূশ্চি বাজারে গরু কিনতে আসা আবদুর রহিম বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম বেশী, পশুর দামও বেশী। আমাদের বেতন তো আর বাড়ে নাই। তাই এবার কুরবানীর পশু কিনতে এসে দুইদিন ফিরে গেছি। আশা ছিলো শেষ সময় দাম কমবে। কিন্তু দাম কমার যেন কোনো নাম নেই। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে কুরবানী দিতে পারবো বলে মনে হয় না।
এছাড়াও, নগরীর নেউড়া বাজারে কুরবানীর পশু কিনতে আসা ফরহাদ হোসেন বলেন, গরুর দাম প্রতিবছরই আকাশছোঁয়া থাকে। কুরবানী দিতে হবে, তাই কিনতে হয়। এবছর ভারতীয় গরুও বেশী দেখছি না বাজারে। যার কারণে দেশীয় গরুগুলোর দাম বাড়তি। ভাগে কুরবান দিবো এবার। দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মধ্য ষাঁড় খুঁজছি। পচ্ছন্দ হলে দরদামে মিলে গেলেই কিনবো। যদি এখানে না মিলে তাহলে অনলাইন থেকে কিনবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এসময় খামারী শফিক মিয়া বলেন, ভারতীয় গরু কম আসায় আমরা ন্যায্য দামটুকু পাচ্ছি এবার। আশা করি বাকী দুইদিনও বাজার ঠিক থাকবে। দ্রব্যমূল্যের দাম বেশী, গরুর খাবারের দাম বেশী। আমাদেরওতো চলতে হয়।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক শামীম আলম বলেন, আমরা প্রতিটি হাট তদারকি করছি যাতে কোনোরূপ বিশৃঙ্খলা না হয়। এছাড়াও, হাসিল নিয়ে যাতে কোনোরূপ সমস্যা না হয় তাই আমরা প্রকাশ্যে হাসিল আদায়ের নির্দেশ দিয়েছি।