হৃদয় হাসান ।। আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি নতুন একটি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ করে। হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের সশস্ত্র লড়াই শুরু করে এ দেশের মুক্তিকামী জনতা। আজ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হবে।
প্রায় দুই যুগ ধারাবাহিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ দেশের মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে শেষ করে দিতে বর্বর হত্যাকাণ্ডে মেতে ওঠে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে। এর আগেই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তাই ২৬ মার্চ জাতির জন্য অনন্য একটি দিন।
স্বাধীনতা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করা হয়। দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে বন্দি রাখা হয়। পাকিস্তানি পরাধীনতা থেকে মুক্তির লড়াইয়ে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়।
৯ মাসের যুদ্ধে এত বেশি মানুষ হত্যার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
আজ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে আজ ছুটির দিন। এই দিনে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। এ ছাড়া কুমিল্লা শহরের দৃশ্যমান ভবনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠন ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। টেলিভিশন, বেতার ও পত্রিকায় প্রচার করা হবে বিশেষ অনুষ্ঠান ও ক্রোড়পত্র। কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আজ কুমিল্লা জেলা প্রশাসন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পতাকা বিধি অনুসরণপূর্বক সকল সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন। ভোর ৫.৫৬ মিনিট কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে ৩১ (একত্রিশ) বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের সূচনা। ভোর ৫.৫৬ মিনিট কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, বঙ্গবন্ধু মুর্যাল, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অবস্থিত শহিদ ডিসি এ কে এম শামসুল হক খান স্মৃতিভাস্কর্য ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অবস্থিত শহিদ পুলিশ সুপার মুন্সি কবির উদ্দিন আহমেদ স্মৃতিভাস্কর্য এবং পুলিশ লাইন শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ। সকাল ৮.০০টা ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বিএনসিসি কর্তৃক কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ; শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন এবং ডিসপ্লে প্রদর্শন।
বাদ যোহর/সুবিধাজনক সময়ে জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি কামনা করে সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা।
বেলা ২.০০টা মহিলা ও শিশুদের ক্রীড়া অনুষ্ঠান (দেশীয় খেলাধুলা), স্থান: কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা।
বিকাল ৪.০০টা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা।
বিকাল ৪.০০টা ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ বিষয়ে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
স্থান: জেলা প্রশাসকের বাসভবনস্থ শহিদ ডিসি এ কে এম শামসুল হক খান মঞ্চ
বিকাল ৫.০০টা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবধৃনা, স্থান: জেলা প্রশাসকের বাসভবনস্থ শহিদ ডিসি এ কে এম শামসুল হক খান মঞ্চ
সুবিধাজনক সময়ে হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবার, পথশিশু পূনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও দিবা যত্ন কেন্দ্রসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন
সুবিধাজনক সময়ে কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী
ক) জেলা পর্যায়ে প্রদর্শনী ফুটবল/ক্রিকেট/ভলিবল/দেশীয় খেলার আয়োজন , স্থান: ভাষা সৈনিক শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম, কুমিল্লা।