রুবেল মজুমদার ।। পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। এর মধ্যে হাটগুলোতে জমে উঠেছে পশুর বেচাকেনা। প্রতিবারের মতো এবারও চাহিদা বেশি ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর। পিছিয়ে নেই ছাগলও ভেড়া। এগুলো মাঝারি আকারের বিক্রি হচ্ছে। তবে এবারও দেশি গরুতে হাটে সয়লাব আছে। ভারতীয় গরু নেই বলে জানিয়েছে হাটের ইজারাদার।
তবে এবার দাম নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগ আছে। সর্বনিম্ন গরু বিক্রি হচ্ছে এক লাখ টাকায়। আর মাঝারি আকারের গরু বিক্রি হচ্ছে দেড় লাখ টাকায়। হাটে লাখ টাকার নিচে কোন গরু বিক্রি হচ্ছে না। এদিকে ছাগলও সর্বনিম্ন ১০ হাজারের নিচে বিক্রি হচ্ছে না। মাঝারি আকারের ছাগল বিক্রি হচ্ছে ১৫ হাজার টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, হাটে মাঝারি আকারের গরু সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। অনেক ক্রেতা দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। তারা দাম বলতে চাচ্ছেন না।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার তারাশাইল হাটে গিয়ে দেখা গেছে, মাঝারি আকৃতির গরু ১ লাখ থেকে দেড় লাখে বিক্রি হচ্ছে। এসব গরুর চাহিদাও বেশ। এছাড়াও অনেক ছোট গরুও হাটে এসেছে। সেগুলোও বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ হাজারের মধ্যে।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মনোহর পুর খেলার মাঠের পশুর হাটে বিক্রেতা রজব আলী। তিনি বলেন, ৪ টি গরু নিয়ে আসছি হাটে । এর মধ্যে একটির দাম চাচ্ছেন দেড় লাখ ও বাকী তিনটা এক লাখ ৮০ হাজার টাকা করে। এরমধ্যে একটি গরু এক লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি । দামে না হওয়ায় বড় দুইটি গরু বিক্রি করেননি তিনি।
একই হাটের সোহেল সর্দার নামে আরে বিক্রিতা বলেন, গরুর বাজার ভালো না। বাজারে গরুর মাংসের দাম বেশি। কিন্তু হাটে গরুর দাম কম। বাজারে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি। সেই হিসাবে একমন মাংসের দাম পড়ছে ৩০ হাজার। অনেকেই এই টার্গেটের কম দাম বলছেন। গরুর দাম চাইলে ক্রেতারা দাম না বলে চলে যাচ্ছে।
একই উপজেলার বাসিন্দা মামুন সর্দার দুটি গরু বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন। হাটে গত বছরের তুলনায় গরুর দাম কম বলে দাবি করেন তিনি। এবারের হাটে গরু বেশি থাকলেও ক্রেতা কম। এখনও কুরবানির কয়েক দিন দেরি রয়েছে। অনেকেই শেষ হাটের দিকে গরু কিনবেন।
গরু ক্রেতা মোতালেব মিয়াজী বলেন, হাটে গরুর দাম তুলনামূলক বেশি। এক লাখ ও দেড় লাখ টাকা দামের গরুগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। ছোট ও মাঝারি আকারের এই গরুগুলোর চাহিদা বেশি। যে গরু পছন্দ হচ্ছে তা দেড় লাখের নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই হাটে গরু দেখছি। পছন্দ আর দামে হলে গরু নেবো।
আরেক ক্রেতা শামীম আহমেদ বলেন, সাত ভাগে কুরবানি দেবো। তাই একটা গরু কিনেছি এক লাখ ৪৫ হাজার টাকায়। গরুটি ওজন হবে প্রায় সাড়ে ৪ মণ। এই সাইজের গরু গেল বছরে এক লাখ ১০ হাজারে পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এবার দাম অনেক বেশি।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এবার স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে অন্তত ৪৯০টি কোরবানির পশুর হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী পশুর হাট ৩৮টি, অস্থায়ী ৩৯৪টি। সবচেয়ে বেশি পশুর হাট বসেছে মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় ৪১টি করে। এছাড়া চৌদ্দগ্রামে বসবে ৩৬টি। অনলাইনেও চলছে পশু বেচা-কেনা।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এবার ২ লাখ ৭৯ হাজার ১২০টি পশু কোরবানির চাহিদা আছে। তার বিপরীতে এবার পশু রয়েছে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৭৮৮টি। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন জেলায় কোরবানির জন্য যে পরিমাণ পশু রয়েছে তাতে চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ১০
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন,আমরা প্রতিটি হাট তদারকি করছি যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়। আমরা সেই দিকে খেয়াল রাখছি , হাসিল নিয়ে যাতে কোনো সমস্যা না হয় তাই আমরা প্রকাশ্যে হাসিল আদায়ের নির্দেশ দিয়েছি।