# নগরজুড়ে আনন্দ-উত্তেজনা
# অনড় অবস্থানে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপ
মাহফুজ নান্টু ।। আজ শনিবার কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের প্রথম ত্রি বার্ষিক সম্মেলন।এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গেলো কয়েকদিন ধরে কুমিল্লা নগর আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদর মাঝে আনন্দ একই সাথে উত্তেজনাও বিরাজ করছে। আজ সেই মাহেদ্রক্ষন। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটি হওয়ার পর এটি প্রথম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামীলীগের এই ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে কুমিল্লার রাজনীতিতে উষ্ণতা শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন পর হিসেব নিকেশে ব্যস্ত সময় পার করেছেন সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা। কে পাবেন মহানগর আওয়ামীলীগের দায়িত্ব। কারা থাকবেন কমিটিতে। এ নিয়ে জল্পনা কল্পনা চলছে। চায়ের দোকান থেকে অফিস পাড়া সবখানেই সম্মেলনকে ঘিরে চলেছে আলাপ আলোচনা৷
এদিকে বহুল কাঙ্ক্ষিত এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের স্বাগত জানিয়ে ব্যানার পোস্টার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে নগর কুমিল্লা। এই সম্মেলন দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শুক্রবার বিকেলে নগরীর টাউনহলে গিয়ে দেখা যায়, সম্মেলনের জন্য মঞ্চ প্রস্তুত করা হচ্ছে। টাউনহলজুড়ে শোভা পাচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে শুভেচ্ছা সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন।
কুমিল্লার আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে দুটি ধারায় বিভক্ত। কুমিল্লা সদর আসনের সাংসদ ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার ও প্রয়াত বর্ষীয়ান নেতা অধ্যক্ষ আফজল খান। আফজল খান প্রয়াত হওয়ার পর তার জ্যেষ্ঠ কন্যা সংরক্ষিত সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আঞ্জুম সুলতানা সীমা। সীমা মহানগর আওয়ামীলীগের বঞ্চিত নেতাকর্মীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এই সম্মেলনে যেন অন্যরা এসে দখল করতে না পারে সে জন্য হুঁশিয়ারী দিয়েছেন সদর আসনের সাংসদ আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার।
গেলো ৩০ অক্টোবর কুমিল্লা সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, ৫ নভেম্বর আরেকটি সম্মেলন আছে। যারা ঢাকায় গিয়ে কান্নাকাটি করেন তাদের বলছি কেউ দখল করতে আসবেন না। আওয়ামীলীগের কর্মীরা আওয়ামীলীগ করে দখল করতে আসে না।
তবে আঞ্জুম সুলতানা সীমাও বলেছেন যে কোন মূল্য তিনি তার নেতাকর্মীদের নিয়ে সম্মেলনে যাবেন। নেত্রীর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে জানান আওয়ামীলীগের এই নেত্রী।
৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কুমিল্লা নগরীর পূবলী চত¦রে সংরক্ষিত সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমা বলেন, আগামী পাঁচ তারিখ মহানগর আওয়ামীলীগের সম্মেলন হবে। আমরা সম্মিলিতভাবে শান্তিপূর্ণভাবে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবো। কেউ যদি বাঁধার সৃষ্টি করে আমরা তাদেরকে উচিৎ জবাব দেবো।
মহানগরের সম্মেলনের আয়োজন নিয়ে নগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ বলেন, ২৭ ওয়ার্ডের ১৭ জন করে মোট ৪৫৯ জন ডেলিগেট থাকবেন। প্রথম অধিবেশনে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে ১২ জন করে অংশ গ্রহণ করবেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে ৫ জন করে অংশ গ্রহণ করবেন। তবে সমাবেশে সবাইকে স্থান দেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে আওয়ামীলীগ নেতা আতিক উল্লাহ বলেন, মহানগরের সব নেতাকর্মীরা সম্মেলনে আসবেন। সবার মধ্যেই আনন্দ পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে সবাইকে জায়গা না দিলেও দলের নেতাকর্মীরা সম্মেলনের আশেপাশে অবস্থান করবেন।
এদিকে সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়ে শুক্রবার মহানগর আওয়ামীমীলীগের উদ্যােগে একটি আনন্দ মিছিল নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে।
৫ নভেম্বর কুমিল্লা টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠিতব্য মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন প্রধান অতিথি থাকবেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক হিসেবে আছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের মেয়র আরফানুল হক রিফাত।
এর আগে গত ৩১ অক্টোবর কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে সোমবার দিনভর নগরীর রামঘাটস্থ দলীয় কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা শেষ করেছেন সাংসদ বাহাউদ্দিন বাহার। অপর দিকে একই দিন নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে প্রস্তুতি সভা শেষ করেছেন সংরক্ষিত সাংসদ ও নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আঞ্জুম সুলতানা সীমা।