শুক্রবার ২৬ জুলাই ২০২৪
Space Advertisement
Space For advertisement


অর্থমন্ত্রীর নাম বলে চাকরীর প্রলোভন! অর্ধশত কোটি টাকা আত্মসাৎ!


আমাদের কুমিল্লা .কম :
03.10.2023

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ ।। উচ্চ বেতনে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে অর্ধশত বেকার তরুন-তরুনীর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মেহেদী হাসান আশিক নামের এক ভয়ংকর প্রতারকের বিরুদ্ধে। প্রতারনায় নিঃস্ব তরুন-তরুনীরা বিচারের আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সুফল পাচ্ছেনা। কিন্তু ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে বীর দর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রতারক আশিক।
প্রতারক আশিক সে নিজেকে অর্থমন্ত্রী আহম মোস্তফা কামাল এর ঘনিষ্ঠ লোক বলে দাবি করে এবং কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই গোলাম সারওয়ার এর সাথে কথা বলে চাকরী দেওয়ার নাম বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এমনকি আশিক তিনি অর্থমন্ত্রীর এপিএস কেএম সিংহ রতনের নাম বলেও টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
জানা যায়, শেরপুর জেলার বলাইয়ের চর এলাকার চরজঙ্গলদী গ্রামের হতদরিদ্র লাইলা আফরিন পেশায় স্বাস্থ্য সেবিকা। ২৫ নভেম্বর ২০২২ সালে প্রতারক আশিকের সাথে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় হয়। পরবর্তীতে সে কুমিল্লা থেকে শেরপুর লাইলার বাসায় বেড়াতে যায়। এতে লায়লার স্বামীর সাথেও পরিচয় হয়। প্রতারক নিজেকে একজন উকিল হিসেবে পরিচয় দেয়। পরে অর্থমন্ত্রী আহম মোস্তফা কামাল এর ঘনিষ্ঠ লোক বলে দাবি করে এবং কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই গোলাম সারওয়ার এর সাথে কথা বলে অনেক লোককে চাকরি দিয়েছে এবং অর্থমন্ত্রীর এপিএস কেএম সিংহ রতনের সাথেও কথা বলে চাকরি দেন। পরে তার কথা শুনে লায়লা ও তার স্বামীর সাথে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে লাইলার বোন নাছরিন আক্তার মিতুকে পরিবার পরিকল্পনায় চাকরী দিয়ে দিবে আশিক লায়লাকে আস্বস্ত করে। এতে আশিক দাবি করেন ১২ লক্ষ টাকা। প্রতারক আশিকের কথা বিশ্বাস করে বিকাশ ও নগদে ৪ লক্ষ টাকা দেন লায়লা। এরপর থেকে সে লাপাত্তা। এই টাকা ফেরত চাইলে আশিক আজ ফেরত দিবে কাল ফেরত দিবে বললেও এখনো টাকা দেয়নি। ভুক্তভোগী লায়লা বোনের টাকার চাপে পড়ে আজ পথে পথে। এতে লায়লা বাদী হয়ে শেরপুর আদালতে তার নামে মামলা করেন।
শুধু সে একা নয় চাকরী দেওয়ার কথা বলে প্রতারক আশিক কুমিল্লা সদর দক্ষিণ এলাকার প্রায় ৪০ জনের মত লোককে চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে সটকে পরেছে। সে সদর দক্ষিণ উপজেলার পশ্চিম জোড়কানন ইউনিয়নের বানীপুর এলাকার মৃত আবদুল খালেকের ছেলে মেহেদী হাসান আশিক (৪৫)।
আরও জানা যায়, সদর দক্ষিণ এলাকার শিমপুর এলাকার সাইফুলের থেকে ২ লাখ টাকা, লোনের নাম বলে জাহাঙ্গীর থেকে ২ লাখ টাকা, রেলে চাকরী দিবে বলে আবু তাহের থেকে ২ লাখ টাকা, কমলাপুর ইয়াসিন মজুমদার থেকে ২লাখ টাকাসহ বিভিন্ন লোকের থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা বিভিন্ন কৌশলে হাতিয়ে নেয়। সম্প্রতি শেরপুরে লায়লা আফরিনের মামলার জেরে সে এখন পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। গত মঙ্গলবার লায়লা আফরিন তার বাড়িতে অনশনে বসলে সে ঘর থেকে পালিয়ে যায়। পরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর প্রতারক আশিককে গ্রেফতারের আস্বস্ত করে তাকে নিরাপদে শেরপুরে পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
ভুক্তভোগী লায়লা আফরিন বলেন, আমি আজ পথে পথে ঘুরছি। সে টাকা দিবে বলেও এখনো দেয়নি। পুলিশ প্রশাসন আমাকে আশ্বস্ত করায় এখন ওনাদের উপর ভরসা রেখে বেঁচে আছি। না হয় আমি আমার টাকার জন্য আত্মহত্যা করব। এখন শুনতেছি সে নাকি বিদেশ চলে যাবে।
এ বিষয়ে সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই গোলাম সারওয়ার বলেন, সে আমাদের নাম বলে যে কাজ করেছে তার যেনো উপযুক্ত শাস্তি হয়। আর তার বিরুদ্ধে যে ২০ লক্ষ টাকার মামলা দেওয়া হয়।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর বলেন, কিছুদিন পর আশিকের নামে ওয়ারেন্ট বের হলে সে যেখানে থাকুক তাকে গ্রেফতার করা হবে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা র‌্যাব কোম্পানি অধিনায়ক এ কে এম মুনিরুল আলম বলেন, শেরপুর থেকে এক নারী প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। আমরা বিষয়টি দেখেছি ও তাকে আটকের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।