স্টাফ রিপোর্টার ।। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির একদফা দাবি আদায়ে বিএনপি’র চলমান রোডমার্চ কর্মসূচি আগামীকাল ৫ অক্টোবর সকাল ৯টায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক, কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ ও পূনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি হাজী আমিন উর রশীদ ইয়াছিনের সভাপতিত্বে চট্রগ্রাম বিভাগের রোড মার্চ কর্মসূচির সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
পরে রোড মার্চ কুমিল্লা, ফেনী অতিক্রম করে দেশের বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে এসে শেষ হবে।
এই কর্মসূচি ঘিরে উজ্জীবিত কুমিল্লা দক্ষিণ,উত্তর জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। এই কর্মসূচি সফল করার জন্য কুমিল্লা দক্ষিণ ,উত্তর ও মহানগর বিএনপি ও এর সকল অঙ্গসংগঠন গত পক্ষকাল ধরে বিরতীহীন ভাবে বিভিন্ন সভা,সমাবেশ,গণসংযোগ ,লিফলেট বিতরণসহ নানা প্রচারণামূলক কর্মসূচী পালন করে আসছে। এতদিন কুমিল্লার যে সকল বিএনপির নেতাকর্মীরা কিছুটা নিরব ছিল এই রোড মার্চকে ঘিরে তারাও এখন সরব হয়ে উঠছে। এত দিন ধরে নিস্কৃয় থাকা নেতাকর্মীদের বক্তব্য, আমাদের প্রিয় নেতা ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হাজী ইয়াছিন ভাই ডাক দিয়েছেন, তাই আর ঘরে বসে থাকা সম্ভব না।
রোড মার্চের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহবায়ক উদবাতুল বারী আবু ও সদস্য সচিব ইউছুফ মোল্লা টিপু বলেছেন, কুমিল্লা নগরীর ২৭টি ওয়ার্ড থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী রোড মার্চে উপস্থিত হবে। আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করেছি। বর্তমান হায়েনার হাসিনা সরকারের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত কুমিল্লা মহানগরের নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরবে না।
কুমিল্লা দক্ষিন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজী জসিম উদ্দিন বলেছেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রতিটি ইউনিটে আমাদের প্রিয় নেতা হাজী ইয়াছিন ভাইয়ের নেতৃত্বে আমরা গত ১৫ দিন ধরে প্রচার প্রচারণা চালিয়েছি। এবং আমার নির্বাচনী এলাকা কুমিল্লা ৫ এর প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আমি গণসংযোগ করেছি। স্মরণ কালের সবচেয়ে বেশী লোক সমাগম হবে আমাদের রোড মার্চে । কর্মীরা উজ্জেবিত হয়ে আছে রোড মার্চে অংশ নেয়ার জন্য।
সাবেক এমপি ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক হাজী আমিন উর রশীদ বলেছেন, কুমিল্লার সর্বস্তরের জনগণ আগামীকাল ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতের ভোটের অবৈধ এই সরকারকে লাল কার্ড দেখাবে। আমি দায়িত্ব নিয়ে আল্লাহর রহমতে বলছি, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড়,ব্যাপক এবং নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণের সম্পৃক্ততার মধ্যে দিয়ে এই রোড মার্চ অনুুষ্ঠিত হবে। আমরা জেলা দক্ষিণ ও কুমিল্লা মহানগর আমাদের প্রতিটি ইউনিটে আমরা প্রতিটি অঙ্গসংগঠন নিয়ে আমাদের প্রচার প্রচারণা চালিয়েছি। ইতিমধ্যে আপনি দেখেছেন, এই রোড মার্চকে কেন্দ্র করে নগর কুমিল্লায় আজ উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।এমনকি অনেক সাধারণ মানুষও রোড মার্চ সফল করার জন্য দোয়া করছে এবং তারা তাদের অবস্থান থেকে অংশ নিবে বলে আমাদের জানিয়েছেন। এই অবৈধ, ভোট চোর, মানুষ হত্যাকারি, গণতন্ত্র লুণ্টনকারি, ফ্যাসিবাদ ও রাতে ডাকাতি করা ভোটের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন না ঘটিয়ে এবার কুমিল্লার মানুষ ঘরে ফিরবে না। এই রোড মার্চের প্রতি মানুষের আগ্রহ দেখে ব্যক্তিগত ভাবে আমি ভিষন আশাবাদী যে, চলতি মাসেই শেখ হাসিনার পতন ঘটবে ইনশাআল্লাহ।
জানা যায়, রোড মার্চ চট্রগ্রাম গিয়ে শেষ হবে। এই দিন সেখানকার জনসভায় কঠোর কর্মসূচি দিতে পারে দলের হাইকমান্ড।আর চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের একেবারে শেষ সময়ের এই কর্মসূচি সফল করতে জোরেশোরে নেমেছে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। এরপর এটি ফেনী, মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম নগরে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে। রোডমার্চে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মোট চারটি জনসভা হবে। সকাল ৯টায় প্রথম সভাটি হবে কুমিল্লায়। এই সভা শেষে রোডমার্চ রওনা হবে ফেনীর পথে।
ফেনীর মহিপালে হবে দ্বিতীয় জনসভা। তৃতীয়টি হবে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা সদরে। এরপর চট্টগ্রাম নগর বিএনপি’র কার্যালয় নাসিমন ভবন সংলগ্ন কাজীর দেউড়ি মোড়ে সমাবেশের মাধ্যমে এই কর্মসূচি শেষ হবে।
প্রায় ১৫০ কিলোমিটারের এই রোডমার্চে মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকবেন। শুধু দলীয় নেতাকর্মী নয়, ব্যাপক সংখ্যক সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করতে চাচ্ছেন তারা।
