স্টাফ রিপোর্টার।। কুমিল্লা নগরীর ২৭ নং ওয়ার্ডের চৌয়ারা এলাকায় দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় বিএনপি সমর্থিত কর্মী এক প্রবাসী ও আরেকজন গরু ব্যবসায়ী ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে মারধরসহ লুটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের আরেক অংশের বিরুদ্ধে। আহতদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলায় আহতরা হলেন, মাটিয়ারার স্বপন ও পাঠানকোটের কামরুল মজুমদার।
স্থানীয় সূত্রসহ একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত ১ নভেম্বর দিনে ও রাতে নগরীর চৌয়ারা বাজারের পাশ্ববর্তী এলাকার বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরীর সমর্থিত বিএনপির কর্মী মনির হোসেনের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ইতিমধ্যে এই হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্বপনের শশুর আবুল কাশেম(৬০) ও শহীদ মজুমদার (৫০) বাদী হয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
ভুক্তভোগী শহীদ মজুমদার বলেন, সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরীর কর্মী মনিরের নেতৃত্বে যারা আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে তার দীর্ঘদিন রাজনীতির অপব্যবহার বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে চাঁদা দাবিসহ হামলা লুটপাট করে আসছে। বিশেষ করে গত ৫ আগস্ট থেকে এলাকায় তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে। গত শুক্রবার রাতে আমার কাছে চাঁদা দাবি করেন মনির ও তার বাহিনী। আমি তাদের দাবিকৃত চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে রাতে মনির তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অস্ত্র দিয়ে আমার উপর হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারাত্মক আহত করে। আমি এদের গ্রেফতার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি ।
অপর ভুক্তভোগী স্বপন বলেন, আমি চৌয়ারা বাজারে গরু ও মাটিয়ারায় চা বিক্রি করি। কোন রকম খেয়ে না খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। আমার মাছ দোকান থেকে বিএনপির নামে বিভিন্ন অপকর্ম করা ব্যক্তি মনির সে মাছ কিনে টাকা না দিয়ে চলে যায়। বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানালে মনির ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারধর করে। তার সাথের আরেক নেতা আওলাদ চাপাতি বের করে হামলা চালায়। আমি আমার নিরাপত্তা চেয়ে জড়িত সকলের শাস্তি চাই। ছুড়ি দিয়ে আঘাত করে আমার সাথে থাকা গরু বিক্রির টাকা নগদ ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা বলেন, মনিরের নেতৃত্বে আলী, আওলাদ, আকবর, মিজান, কবির, মিজান, খোকা,আবদুল্লাহ, শাহ আলম,ইকবাল, এরশাদ, শরীফসহ অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে তাদের ওপর হামলা করে মারধর করেছে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ভূক্তভোগীর পরিবার জানায়, বর্তমানে তাদের সকলের পরিবারের জীবন নিয়ে তারা শঙ্কিত। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
হামলার বিষয়ে বিএনপির কর্মী ও অভিযুক্ত মনির হোসেন বলেন, পাশের দোকান থেকে তারা রড এনে আগে হামলা করছে আমাদের উপর। আমি গেছি বিএনপির অফিসে কেন হামলা হইছে, তার কারন জানতে । নিজেকে রক্ষার জন্য তাদের উপর পাল্টা হামলা করেছি। তারা রড দিয়ে আমাদের উপর হামলা করেছে। দোকান থেকে রড নিছে লিটন,কামরুল, আরিফ, ফয়সাল, রায়হানরা । উপরে আল্লাহ আছে এখন আজানের সময়, আমি কিরা কাটিনা। তারা আমাদের উপর হামলা করে এখন আমাদের উপর দোষ চাপাচ্ছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমাদের সাথে সেনাবাহিনী ছিলো। আমরা ঘটনার প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।