মহসিন বিন হাবিব, তিতাস ।। প্রায় ২ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার ও মেরামত কাজ ফেলে রেখে ১০মাস ধরে লাপাত্তা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) এক ঠিকাদার।সড়কজুড়ে খানাখন্দ ও ছোট-বড় গর্তের কারণে পথচারীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা সদর কড়িকান্দি ইউনিয়ন ইউসুফপুর গ্রাম থেকে মৌটুপী ব্রিজ পর্যন্ত(১৯৪৮ শত মিটার ) প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের অবস্থা বেহাল।
বর্ষা শুরুর পর বৃষ্টিতে সড়কটি কাদাপানিতে একাকার হয়ে থাকে। বিভিন্ন স্থানে গর্ত আর গর্ত। বৃষ্টিতে এসব গর্তে পানি জমে রাস্তা থাকে কাদার দখলে। আর শূস্কাবস্থায় থাকে ধুলোর দখলে।
এতে এলাকাবাসীর ভোগান্তি অসহনীয় করে তুলেছে। সবজি ও কৃষিপণ্য পরিবহনসহ সময়মতো গন্তব্যে যাওয়া যাচ্ছে না। চরম পর্যায়ে বেড়েছে ভোগান্তি। এ অবস্থায় যাতায়াত করে রাস্তার ওপর বিকল হচ্ছে যানবাহন।
এ সড়ক দিয়ে ইউসুফপুর,নলচর, চাঁন্দনাগেরচর,বন্দরামপুর, দুখিয়ারকান্দি ও নয়াকান্দি’সহ আশপাশের গ্রামের হাজার হাজার মানুষ জেলা ও উপজেলা যাতায়াত করেন।
ইউসুফপুর গ্রামের মো. শেখ ফরিদ (৬০) জানান, আগেই রাস্তাটা ভালো ছিল মোটামুটি চলাচল করা যেত। কিন্তু সংস্কারের নামে রাস্তাটা খুড়ে এলাকাবাসীর কপালে দুর্ভোগ এসেছে। তাছাড়া প্রসূতিসহ জরুরি রোগী হাসপাতালে যেতেও শঙ্কায় থাকি আমরা। মসজিদের খাটিয়ায় করে নতুবা ৫/৬ জনে কাধে বহন করে নিয়ে যেতে হবে হাসপাতালে।
একই গ্রামের মো. জাকির হোসেন খান বলেন,দেড় লক্ষ টাকা খরচ করেছি রাস্তার কাজে কিন্তু বৃষ্টির কারনে পুনরায় নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া বৃষ্টি হলে রাস্তায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। কিছুদিন পুর্বে
আব্দুস সাত্তার (৮৫) নামের এক হার্টের রোগীকে চারজনে কাধে করে অনেক কষ্টে হাসপাতালে পৌঁছানো হয়েছে।
ঠিকাদার ও এলজিইডির কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।সড়কটির স্থানে স্থানে ইট উঠে মাটির সড়কে পরিণত হয়েছে। বর্ষা শুরু হওয়ার পর কাঁদাপানিতে একাকার হয়ে আছে। মালামাল আনতে অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া দিতে হয়।
ভোগান্তির কথা জানিয়ে হাইড্রোলিক ট্রাক্টর চালক জাকির হোসেন বলেন, সড়কের যে অবস্থা তাতে মনে হয়, এই বুঝি গাড়ি উল্টে গেলো। যন্ত্রপাতি তো নষ্ট হচ্ছেই। সেইসঙ্গে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
তিতাস উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন,কুমিল্লা,চাদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রকল্পের আওতায় প্রকল্পের আওতায় ১কোটি কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ পেয়েছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তন্নি এন্টারপ্রাইজ। কিন্তু ঠিকাদার সড়কে ইটের খোড়া ফেলে প্রায় ৮/১০ মাস ধরে কাজ বন্ধ রেখেছেন। এলজিইডির সঙ্গে কোনও ধরনের যোগাযোগ করছেন না। এ অবস্থায় তার সঙ্গে চুক্তিপত্র বাতিল করার জন্য উর্ধতন কর্মকর্তাকে চিঠি পাঠিয়েছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তন্নি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, এ রাস্তার শুরুতে মৌটুপী অংশে নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য পুরনো ব্রিজটি ভেঙ্গে নতুন ব্রিজের কাজ ধরে, মাঝ পথে এসে কাজ বন্ধ করে রেখেছেন। এতে বিকল্প রাস্তা করেছে অনেক নীচু ও মারাত্বক ঝুকিপূর্ণ। এহেন অবস্থায় রাস্তার মালামাল নিয়ে যাতায়াত করা যাচ্ছেনা বলেই কাজের অগ্রগতি হচ্ছেনা।