স্টাফ রিপোর্টার ।। কুমিল্লার হোমনায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের নামে বাজে মন্তব্য করার অভিযোগে ছাত্রলীগের দুইগ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ অন্তত ৩ জন আহত হয়েছেন। এক জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। এ ঘটনায় হোমনা থানায় পৌর ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ৬ জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুই জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. ফয়সাল সরকার বুধবার দুপুরে ঢাকা থেকে আগত এক আত্মীয়কে রিসিভ করতে বাসস্ট্যান্ডে যান। সেখানে যুবলীগ নেতা ইয়াসীনকে দেখে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং অন্যান্য নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ফেইসবুক ও নানা স্থানে বাজে মন্তব্য করার অভিযোগ করেন ফয়সাল। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এর পর উভয়েই যে যার মত চলে যায়।
থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই দিন বিকেলে ইয়াসিন তার ভাই পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরান দলবল নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সরকারের বাড়িতে গিয়ে তার মোটর সাইকেল ভাঙচুড় ও গালাগাল করেন। বিষয়টি থানাকে জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফয়সাল সরকার তার মা ও বন্ধু পলাশ নিয়ে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পথিমধ্যে থানার সামনে আবার তাদের ওপর আক্রমণ করেন প্রতিপক্ষ। এতে ফয়সাল সরকার তার মা ও বন্ধু পলাশ আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিসা দেওয়া হয়েছে ও পলাশকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।
এদিকে ফয়সাল সরকারের ওপর হামলার প্রতিবাদে উপজেলা ছাত্রলীগ হোমনা সদরে মিছিল ও থানা গেটে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। এতে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, তাঁতী লীগ ও কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা যোগ দেন। সমাবেশে অনতিবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি খন্দকার নজরুল ইসলাম, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মো. মনির হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফোরকানুল ইসলাম পলাশ, পৌর যুবলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম প্রিন্স, হোমনা ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সামসুল আলম শুভ ও সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ পারভেজ, রামকৃষ্ণপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি যুবরাজ, যুবলীগ নেতা সৈয়দ মেহেদি, তরিকুল ইসলাম পিয়াস প্রমুখ।
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সরকার বলেন, ‘আমার এক আত্মীয়কে রিসিভ করতে বাসস্ট্যান্ডে যাই। পথিমধ্যে ইয়াসিনকে পেয়ে মাননীয় এমপিসহ অন্যান্য নেতাদের নামে আজে বাজে মন্তব্য করার বিষয়ে জানতে চাই। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে কথাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে আমি চলে গেলে ইয়াসিন ও ইমরান দলবল নিয়ে আমার বাড়িতে গিয়ে হামলা করে আমার মোটর সাইকেল ভেঙে ফেলে। বিষয়টি থানাকে জানালে বাড়িতে পুলিশ আসে। সন্ধ্যায় এ ঘটনায় আমার মাসহ থানায় অভিযোগ করতে যাচ্ছিলাম। এর পর থানার সামনে তারা আবার আমাদেও ওপর লাঠিসোঁটা ও ছোরা নিয়ে আক্রমণ করে। এমে আমিসহ মা ও বন্ধু পলাশ মারাত্মক আহত হয়।
পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি মো. ইমরান তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, ফয়সাল তার দলবল নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে আমার ভাইকে মারধর করে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা তিন লাখ টাকাও নিয়ে যায়। আমরাও থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
হোমনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় ইয়াসিন, ইমরানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মো. ইয়াসিন ও মো. আল আমিনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।