রুবেল মজুমদার
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ কুমিল্লা জেলা প্রশাসন থেকে জেলা ১৮ দফা জরুরি নির্দেশনা জারি করেন কুমিল্লায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমে জেলার গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ যাত্রী নেয়া হচ্ছে,সকল প্রকার রিসোর্ট, পিকনিক স্পট, বিনোদন পার্ক, কমিউনিটি সেন্টার, কোচিং সেন্টার, সিনেমা হল, ক্লাবসমূহসহ জনসমাগমস্থল বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা করেন ।
শনিবার জেলার করোনা শনাক্ত হয় ৩৮জনের। মারা যান দুইজন।
সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লায়ও বুধবার থেকেই গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ যাত্রী নেয়া হচ্ছে। যাত্রীরা ৬০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া গুনছেন। দিনের শুরুতেই শাসনগাছা,বিশ^রোড,জাঙ্গালিয়া বাসস্টেশন ব্যস্ততম পয়েন্টগুলো ঘুরে দেখা যায়, অসংখ্য মানুষ যানবাহনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। সকালের নরম রোদ ধীরে ধীরে প্রখর হচ্ছে। রোদের সেই প্রখরতা গায়ে মেখেই মোড়ে মোড়ে গন্তব্যমুখী মানুষ নির্দিষ্ট গাড়িটির জন্য অপেক্ষা করছিল। একটা সময় সেই কাক্সিক্ষত গাড়ির দেখা মিললেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভোগান্তিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেয়া যায় ,সকাল থেকেই কর্মজীবী মানুষদের গন্তব্য অভিমুখে ছুটতে বাড়তি বেগ পেতে হয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, অনেকেই মাস্ক পরছেন না। যত্রতত্রভাবে গাড়িতে উঠছেন। বর্ধিত ভাড়ায়ও জনভোগান্তি কমেনি। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানারও কোনও বালাই নেই। তাতে করে ভাড়া বাড়িয়ে যাত্রী কম উঠালেই লাভ কি?
কুমিল্লায় থেকে ফেনীগামী দেলোয়ার হোসেন বলেন,সরকার বললে হবে কি,এখানে কোনো নিময় মানা হচ্ছে না,ডাবল সিটের ভাড়া দিলে ও পাশের সিটে যাত্রী বসে আছে,চালকে অভিযোগ করলেও কোন লাভ নেই ।
জেলায় সকাল থেকে গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ যাত্রী নেয়ার কারণে অনেককেই সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছুতে বেগ পেতে হয়েছে। কেউ কেউ আধা ঘণ্টার পথ আড়াই ঘণ্টায় গিয়েছে। অন্যান্য স্বাভাবিক দিনগুলোতে বাসে গাদাগাদি করে লোক তুললেও এখন অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের কারণে গন্তব্যমুখী মানুষ যানবাহন সংকটে পড়েছে। বাসের ভেতর অর্ধেক ফাঁকা থাকলেও উঠানামার সময় যে ধাক্কাধাক্কি তাতে করে সংক্রমণ এড়ানোর কোনও সুযোগ নেই। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে অর্ধেক বাস ফাঁকা রেখেও লাভ নেই বলে মনে করছেন সচেতন যাত্রীরা।
কুমিল্লা থেকে নোয়াখালীগামী যাত্রী শাহিদ হাসান বলেন, দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যদি ধাক্কাধাক্কি করেই বাসে উঠতে হয় তাহলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। বর্ধিত বাড়ায়ও জনভোগান্তি কমছে না। এক্ষেত্রে কর্মস্থলে ৫০ ভাগ জনবলের সরকারি নির্দেশনা দ্রুত কার্যকরের পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।
এবিষয় জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলা বাস ও মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাজী মোতাহার হোসেন বলেন, দু-একদিনের মধ্যেই এ ভোগান্তি কমে আসবে। এজন্য নগরবাসীকে একটু বাড়তি সময় হাতে নিয়ে ঘর থেকে বের হওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কুমিল্লা সির্ভিল সার্জন মীর মোবারক হোসেন বলেন, এমনিতে দেশের অবস্থায় খুবই নাজুক। কাল থেকে আমরা মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করবো। এই বিষয় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাস মালিকদের সাথে এই বিষয মিটিং করবো ।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান জানান, রোববার থেকে আমরা জেলা বিভিন্ন স্থানে ভ্রম্যামাণ অভিযান পরিচালনা করবো। কেউ নিয়ম লঙ্ঘন করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।