আবু সুফিয়ান রাসেল।। আল্লাহর গুণবাচক ৯৯ নামের ফলক বাংলাদেশে সর্বপ্রথম নির্মাণ করা হয় কুমিল্লা নগরীর ফৌজদারী মোড়ে। ২০১৬ সালের শেষ দিকে নির্মিত এ ফলকটি ২০১৭ সালের ৯ জানুয়ারি মোড়ক উন্মোচন করেন মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু। শিল্পীর দাবি কুমিল্লায় সর্বপ্রথম আল্লাহর নামে ফলক বা মন্যুমেন্ট তৈরি হয়েছে। যার অনুকরণে পরবর্তী সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ¥ীপুর, মুন্সিগঞ্জ, মুরাদনগর, জিলা স্কুল সড়ক ও নরসিংদী জেলায় আসমাউল হুসনা বা আল্লাহর গুণবাচক নামের ফলক, স্মৃতিস্তম্ভ, স্মৃতিলিপি, লিপি, স্মৃতিচিহ্ন তৈরি করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, নগরীর ফৌজদারী মোড়ে আরবি হরফে পবিত্র কালিমা খচিত ফলকটির উচ্চতা ভূমি থেকে ১৬ ফিট, ব্যাস ১০ ফিট। তিনটি স্তম্ভের মাঝখানে আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম আরবি হরফের সাথে বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ লিখা আছে। সর্বোচ্চে আল্লাহু লিখা এবং এর নিচের অংশে রয়েছে ছয়টি আরবি ক্যালিওগ্রাফি ট্যারা কাটা সমৃদ্ধ পানির ঝর্ণা রয়েছে। যা দৃষ্টিনন্দন। এটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিল কুমিল্লা সিটি করপোরেশন। কুসিকের এ ব্যতিক্রমী কাজ দেখে অন্যান্য জেলায়ও পরবর্তী সময়ে বেশ কয়েকটি আল্লাহর গুণবাচক সমৃদ্ধ ফলক তৈরি হয়েছে।
কুমিল্লার পর ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবার কদমতলী মোড়ে পবিত্র কোরআনুল কারিমের একটি বিশেষ স্থাপনা তৈরি করা হয়। ২০১৯ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি আসমাউল হুসনা নামে ফলক উম্মোচন করে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা। ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর বাপ্পী নামের একজন ব্যক্তির উদ্যোগে লক্ষ¥ীপুর শহরের দক্ষিণ তেমুহনী ট্রাফিক চত্বরে আল্লাহর নামফলক তৈরি করেন। গেল বছর সেপ্টেম্বর মাসে কুমিল্লার মুরাদনগর বাসস্ট্যান্ডের মোড়ে আল্লাহু চত্বর নির্মাণ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে নরসিংদীর আমদিয়া এলাকার কান্দাইল বাসস্ট্যান্ডে নির্মিত হয়েছে আল্লাহর ৯৯ নামের দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য।
কুমিল্লা জিলা স্কুলের সামনের সড়কেও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আল্লাহর নামের ফলক তৈরি করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ এ আসমাউল হুসনা নামে ফলক উন্মোচন করা হয় ।
শিল্পী মোহাম্মদ শাহীন জানান, আল্লাহর নামে মন্যুমেন্ট বা ফলক কুমিল্লায় প্রথম নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালের পূর্বে বাংলাদেশের এমন ব্যতিক্রমী কাজ হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আল্লাহর নামের ফলক আমার জীবনের প্রথম কাজ, দেশের বিখ্যাত শিল্পীদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করি। তারা বলেছেন এ নিয়ে অভিজ্ঞতা নেই। ইতোপূর্বে বাংলাদেশে এমন কাজ আর হয়নি। তবে এটির পর গত চার বছরে কয়েটি জেলায় এ কাজ হয়েছে। যা নগর পিতার সুচিন্তার ফসল।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. মোশাররাফ হোসাইন বলেন, মহান আল্লাহর বহু গুণবাচক নাম রয়েছে। কোরআন ও সুন্নার আলোকে আসমাউল হুসনার গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক। ফৌজদারী এলাকায় যে শিল্পকর্মটি হয়েছে তা খুবই চমৎকার হয়েছে। এগুলো শিয়ারে ইসলাম বা ইসলামে নিদর্শন বলা যায়।
কুসিক মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু বলেন,পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা আল্লাহর নিকট প্রিয়। কথাটি সিটি করপোরেশনের লোগোতে আছে। যা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের ছবি ও নাম সম্বলিত নানা দৃষ্টিনন্দন কাজ করেছি। যা নতুন প্রজন্মকে কুমিল্লার ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে। সৌন্দর্য বর্ধনে অনেক কাজ করা হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে আরও কাজ করা হবে।