রবিবার ১৯ †g ২০২৪
Space Advertisement
Space For advertisement


কৃষক বন্ধু মতিন সৈকত ৩৫০টি পাখি অবমুক্ত করেন


আমাদের কুমিল্লা .কম :
27.04.2017

স্টাফ রিপোর্টার।। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের কৃতিজন। কৃষি পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক মতিন সৈকত। সোমবার কালবৈশাখি ঝড়ে আহত ২০টি চিল খুঁজে বের করে বাড়িতে এনে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ করে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে অবমুক্ত করেন। দাউদকান্দি প্লাবনভূমিতে মাছ চাষের মডেল। জল যেখানে মাছ সেখানে। চিল, ঈগল, বক, পানকৌড়ি, পরিযাই সহ বহু পাখির প্রধান খাদ্য মাছ হওয়ায় এখানে হাজারো পাখির বসবাস। মৎস খামারিরা চাষের ছোট মাছকে রক্ষার জন্য জাল এবং সূতা দিয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে রাখে। এতে অনেক পাখি আটকে আহত হয়ে ঝুলে থাকে। কখনো মারা যায়। মতিন সৈকত এসব পাখি খুঁেজ বের করে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ করে ছেড়ে দেন। ২০০৬ থেকে তিনি এই পর্যন্ত ৩৫০টি নানা প্রজাতির পাখি অবমুক্ত করেন। এছাড়াও বিভিন্ন পাখি। বন্যপ্রানী উদ্ধার, জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ, খাল-নদ পূন:খননে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মতিন সৈকতের দেখাদেখি স্থানীয় শিশু কিশোররা পাখি, পরিবেশ, জীব বৈচিত্র সংরক্ষনে এগিয়ে এসেছে। এলাকায় কোন পাখি আহত বা ক্ষতিগ্রস্থ হলে তার ডাক পরে। তিনি পরিবেশ সংরক্ষন ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারি ভাবে চট্টগ্রাম বিভাগে ২০১৫ ও ২০১৭ তে ব্যক্তিগত ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন। কৃষিতে অবদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী (২০১০) তাকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রদান করেন। সৃষ্টিশীল কর্মকান্ডের জন্য তিনি ১০ম শ্রেনীতে পড়ার সময় (১৯৮৭) মহামান্য রাষ্ট্রপতির অভিনন্দন পত্র পান। মতিন সৈকত ১৯৯৭ থেকে স্থানীয় কৃষকদের ১৫০ বিঘা বোরো ধানের জমিতে আজ পর্যন্ত এক টানা ২০ বছর পৌষ থেকে বৈশাখ ৫ মাস। বোরোধান রোপন থেকে পাকা ধান সংগ্রহ পর্যন্ত যার যতোবার সেচের পানি প্রয়োজন ততোবার সেচের পানি সরবরাহ করে আসছেন মৌসুম ব্যাপি মাত্র ২০০ টাকা বিঘা প্রতি। অন্যত্র বোরোধানের সেচ খরচ দিতে হয় ১২০০-২০০০ টাকা। দেশে বিদেশে এতো কম মূল্যে বোরো ধান উৎপাদনে সেচ প্রদানে এটিই একমাত্র উদাহরণ বলে মতিন সৈকত জানান। দাউদকান্দি রোটারি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মোঃ নুরুল গনি তার সম্পের্কে লিখেন ‘মতিন সৈকত কুমিল্লার কৃতি সন্তান, বিশিষ্ট সমাজকর্মী, কিংবদন্তী পরিবেশ বিজ্ঞানী। যিনি মাত্র ২০০টাকায় প্রতি বিঘা বোরো ধানে মৌসুম ব্যাপী দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ সেচ প্রদানের মাধ্যমে অধিক ফলনশীল বিভিন্ন জাতের ফসল উৎপাদনে কৃষকদেরকে অনুপ্রানীত ও উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যার নজির কখন খুজে পাওয়া যাবে না। জাতীয় সংসদ সদস্য এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব:) সুবিদ আলী ভূইয়া জানান ‘মতিন সৈকত গত ২০ বছর যাবৎ কৃষি উন্নয়নে কাজ করে জাতি গঠনে বিশেষ অবদান রেখেছেন। আমি তার মঙ্গল কামনা করি।’ দি ক্রপ ক্রসেডার, এ রিয়েল পেট্রিয়ট, এ ম্যান টু বি ফলোইড এ্যান লাইটেড মতিন সৈকত নামে তার কাজের উপর প্রতিবেদন হয়। তাকে নিয়ে শাইখ সিরাজ, রেজাউল করিম সিদ্দিকী, রামেন্দু মজুমদার, মুন্নি সাহা, রোম্মান রশিদ- সাদিয়া ওহাব টেলিভিশনে অনুষ্ঠান করেন। বিবিসি তার সাক্ষাৎকার প্রচার করেন। কানাডা বাংলাদেশে সেন্টার এবং এফ এ ও বাংলাদেশ তাকে অভিন্দন জানান। মতিন সৈকত দাউদকান্দি কেন্দ্রীয় আইপিএম- আইসিএম ক্লাবের সভাপতি। নিরাপদ ফসল উৎপাদন আন্দোলন বিশ মুক্ত দাউদকান্দি মডেল উপজেলা বাস্তবায়নের উদ্যোক্তা। প্লাবন ভূমিতে মৎস চাষের দাউদকান্দি মডেল সাথে তিনি সম্পৃক্ত।