চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি ।। কাতার প্রবাসী মোঃ ইউনুস বিয়ের ৩ মাসের মাথায় অসময়ে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যাওয়াটা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেনা নববধূসহ আত্নীয়-স্বজন। একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে পাগলপ্রায় বাবা-মা। তাদের আহাজারীতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। মর্মান্তিক এক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ইউনুসকে গতকাল রোববার সকালে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, স্থানীয় একটি আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক চৌদ্দগ্রামের মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বাংপাই গ্রামের হাফেজ সৈয়দ আহাম্মদের ৩ মেয়ের জন্মের পর অতি আদরের ছেলে ইউনুসের জন্ম হয়। ছোট বেলা থেকেই ভদ্র, নম্র ও শান্ত প্রকৃতির ছিল। মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ করে জীবিকার তাগিদে কাতারে পাড়ি জমায়। ৭ বছর প্রবাসে কাটিয়ে পাকা ঘর নির্মাণ করে ৩ মাস আগে দেশে এসে পাশ^বর্তী যুগীরহাট গ্রামের প্রবাসী ইমাম হোসেনের মেয়ে আফরোজা আক্তারকে বিয়ে করেন। হাতে লাগানো বিয়ের মেহেদীও ঠিকমত এখনো উঠেনি। স্বল্প সময়ের তাদের দাম্পত্য জীবন অত্যান্ত আন্তরিকতার ছিল। পারিবারিক এত সুখ-শান্তির মধ্যেই বিধবা হতে হয়েছে নববধূ আফরোজাকে। স্বামীর বিভিন্ন স্মৃতির কথা বলে কান্না করতে করতে অজ্ঞান হয়ে পড়েছে সে। ৩ বোনের অতি আদরের একমাত্র ছোট ভাইকে হারিয়ে আহাজারী করে করে মুর্চা যাচ্ছে বোনেরা। সাথে তাদের সন্তানেরাও একমাত্র মামার লাশের গাড়ি ঘিরে কান্না করছে। একই এলাকায় নিহত ইউনুসের নানার বাড়ি হওয়ায় পুরো গ্রাম জুড়েই তাদের আত্নীয়-স্বজন। সবার মাঝেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গতকাল রবিবার সকালে নিহত ইউনুসের জানাযায় নিজ গ্রামসহ আশে-পাশে অসংখ্য লোকজন অংশগ্রহণ করেছে। তারা অশ্রুস্বজল চোখে নিহত ইউনুসের স্মৃতিচারণ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। উল্লেখ্য, গত শনিবার সন্ধায় চৌদ্দগ্রামের মুন্সিরহাট-নবগ্রাম সড়কের পুরাতন মালেক বিক্সস্ নামক স্থানে সিএনজি ও ড্রাম ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুমিল্লার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে।