শুক্রবার ২৯ gvP© ২০২৪
Space Advertisement
Space For advertisement
  • প্রচ্ছদ » sub lead 2 » ১৫ বছর ধরে জোয়ারের পানি নেই দাউদকান্দির খিরাই নদে


১৫ বছর ধরে জোয়ারের পানি নেই দাউদকান্দির খিরাই নদে


আমাদের কুমিল্লা .কম :
19.03.2023

দাউদকান্দি প্রতিনিধি ॥ কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার একটি সর্ববৃহৎ নদের নাম খিরাই। এ নদের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার। নদটি উপজেলার গোয়ালমারী এলাকা হইতে নৈয়াইর ভায়া চক্রতলা বাজার হয়ে ভরণ পাড়া হয়ে সাচার খালের সাথে মিলিত হয়েছে। এ নদটি মেঘনা নদীর শাখা থেকে উৎপত্তি। অনেকে এটিকে মেঘনা নদীর শাখা কেউ আবার স্থানীয় খিরাই নদী হিসেবে চিনেন। এ নদের বিভিন্ন অংশে পলি মাটি ভরাট ছাড়াও নদের পাড়ের অনেকে নদের অনেক অংশ দখল করে বাড়ী-ঘর নির্মাণ করেছে। আবার কেউ কেউ নিজেদের সুবিধার্থে ছোট ছোট আইল দিয়ে মাছ চাষ কেউবা ফসল ও চাষ করছে। আর কিছু কিছু অংশে কচুরিপানা ময়লা আবর্জনায় পরিপূর্ণ হয়ে নদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
এক সময়ে এ নদের যৌবন ছিলো, জোয়ারের পানিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হতো নদের চারিপাশে। স্থানীয় কৃষকেরা নদের কোল ঘেঁষে আপন মনে ফসল ফলাতো। জেলেরা নদে মাছ ধরে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতো। আবার অনেকেই নদে নৌকা চালিয়ে জীবিকা উপার্জন করতো। নদে এখন আর জোয়ার না আসায় অনেকেই পূর্বের পেশা পরিবর্তণ করেছেন। এখন আর এ নদের পাল উড়ানো নৌকা দেখা যায় না। নদটি পলি মাটিতে ভরাট হওয়ায় নদীতে জোয়ারও নেই ভাটাও নেই। নদে জোয়ার ভাটা না থাকায় এ অঞ্চলের কৃষকেরা আগের মতো জমিতে ফসল ফলাতে পারছে না।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল কাদির বলেন, প্রায় ১৫ বছর হয় নদে জোয়ারের পানি আসে না। জোয়ারের পানি না আসায় কৃষকরা বর্ষার মৌসুমে নদে যে পানি আটকিয়ে থাকে অথবা মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলে বাসা-বাড়ির পানি নদে নেমে সেই পানির উপরই ভরসা করে আমাদের কৃষি কাজ সাড়তে হয়। আবার অনেকেই নদের পাড়ে ডিব-টিউবওয়েল পানি দিয়ে তাদের প্রয়োজনীয় কাজ সারছেন।
গোয়ালমারী গ্রামের শাহআলম বলেন, খিরাই নদে এখন এ অঞ্চলের দুঃখ গাঁথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদে পানি না থাকায় মৌসুমে ইরি, বোরো সহ অন্যান্য ফসলে আমরা পানি সেচ দিতে না পারায় ফসল ফলাতে পারছি না। নৈয়াইর গ্রামের কৃষক সাদেক বলেন নদীটি জরুরি ভিত্তিতে খনন করা প্রয়োজন। নদটি খনন করা হলে আবারও নদে জেয়ার-ভাটা চালু হবে।
চক্রতলা গ্রামের শাহাবুদ্দিন বলেন, নদে পানি না থাকায় এ অঞ্চলের হাজার হাজার একর জমি অনাবাদি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভরণ পাড়া গ্রামের ওমর ফারুক সরকার বলেন, নদে পানি না থাকায় আমরা নদের পাড়ে ডিব-টিউবওয়েল বসিয়ে ইরি, বোরো আবাদ করছি। তাতে আমাদের তিনগুন-চারগুণ খরচ হচ্ছে। ধনেশ^র গ্রামের কৃষক মোঃ হোসেন বলেন, কৃষি জমি রক্ষায় কর্তৃপক্ষের উচিত নদীটি খনন করে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি করা।
স্থানীয় কৃষি ও পরিবেশবিদ শামসুদ্দিন বলেন, আমরা নদের পাড়ের মানুষ ছোট বেলায় এ নদে জাল দিয়ে মাছ ধরেছি। বাবা-চাচা কৃষি পণ্য চাষ করেছেন। নদে এক সময় পালতোলা নৌকা ছিল। ছিলো কৃষকের মুখে হাসি ছিলো। নদে পানি না থাকায় কৃষকের মুখে এখন আর সেই হাসি নেই।