সাকলাইন যোবায়ের ।। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, কুমিল্লার বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা, জেলা চৌদ্দ দলের সমন্বয়ক, বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট আফজল খানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হয়েছে । ২০২১ সালের এই দিনে ঢাকার এ এম জেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
আফজল খানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বুধবার মরহুমের বিদায়ী আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনায় বুধবার স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকাল ৭টায় কোরআন খতম, কবর জিয়ারত। সকাল ৯টায় স্মরণ সভা। সকাল ১০টায় মিলাদ মাহফিল ও দোয়া মোনাজাত। এছাড়াও সকাল ১১টায় নজরুল এভিনিউস্থ মর্ডান কমিউনিটি সেন্টারে দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরনের আয়োজন করা হয়েছে।
আলোচনা সভায় উপস্থিতদের মধ্যে বক্তব্য প্রধান করেন প্রয়াত আফজল খানের কন্যা নারী আসনের সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমা। উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ ওমর ফারুক, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মোসলেউদ্দিন আহমেদ, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সফিকুল ইসলাম শিকদার, কুমিল্লা চেম্বারের সভাপতি ও অধ্যক্ষ আফজল খানের বড় ছেলে মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, আওয়ামীলীগ নেতা খাদেম মোঃ ফিরোজ, মানিক মিয়া খন্দকার প্রমূখ।
মাহফিলে মিলাদ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন কান্দির পাড় জামে মসজিদের খতিব আলহাজ্ব মাওলানা ক্বারী মোহাম্মদ ইব্রাহিম আল-ক্বাদেরী।
উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ আফজল খান কুমিল্লা অঞ্চলের নেতা হলেও জাতীয়ভাবে নানা কারণে আলোচিত ছিলেন তিনি। কুমিল্লার এ প্রখ্যাত নেতা ১৯৪৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নগরীর রামমালা রোডস্থ পৈত্রিক বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। শিক্ষা আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৬৫ সালে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক কারণে আফজল খান অনেকবার কারাবরণ করেন এবং নির্যাতন ভোগ করেন। তিনি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অধ্যক্ষ আফজল খান হাতিমারা কামাল নগর ক্যাম্পের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। আফজল খান রাজনৈতিক জীবনে কুমিল্লা শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও। পরবর্তীতে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হন। ছিলেন কুমিল্লা জেলা ১৪ দলের সমন্বয়ক। বর্ষীয়ান এই নেতা মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বর্ণাঢ্য জীবনের সমাপ্তি ঘটে।