মঙ্গল্বার ১৯ gvP© ২০২৪
Space Advertisement
Space For advertisement


গোমতী নদীর দু’পাড়ের রাস্তার করুণ অবস্থা !


আমাদের কুমিল্লা .কম :
09.10.2022

মাহফুজ নান্টু ।। সড়কের ইট বালি আর খোয়া উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পানি জমে সেই গর্ত এখন কুয়ায় পরিনত হয়েছে। এমন সড়ক দিয়ে ধুরু ধুরু বুকে বাহন চালকরা যাতায়াত করেন। কখনো কখনো গর্তে আটকে যায় বাহনের চাকা। পিচঢালা সড়কে পানি কাঁদায় একাকারের এমন দৃশ্য কুমিল্লা গোমতীনদীর দুপাড়ের। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারহীন থাকার কারনে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আদর্শ সদর উপজেলার গোমতীনদীর দক্ষিন অংশে কাপ্তানবাজার, ভাটপাড়া, পালপাড়া, আড়াইওড়া, দূর্গাপুর ও আলেখারচর এবং উত্তরপাড়ে বুড়িচং উপজেলার বাবু বাজার, সদর উপজেলার পালপাড়া, বানাশুয়া , এ অংশের উত্তরপাড়টির চানঁপুর থেকে টিক্কারচর অংশে বেঁড়িবাধ এমন ভাবে ভেঙ্গে আছে তাতে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। সেখানে হাটাচলা করাও প্রায় অসম্ভব। সার্বিক অবস্থা দেখে মনে হয়েছে, এ সড়কটি দেখার যেন কেউ নেই।
২০১৮ সালে জেলার সদর উপজেলার গোমতীর প্রতিরক্ষা বাঁধের আমতলী থেকে বিবির বাজার বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিলো। কুমিল্লা নগরীর যানজট থেকে মুক্তি পেতে পন্য পরিবহনের ট্রাকগুলো প্রতিরক্ষা বাঁধ দিয়ে সোজা বিবিরবাজার স্থল বন্দরে যাতায়াত করে। সদর উপজেলার আমতলী থেকে বিবিরবাজার স্থল বন্দর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এই সড়কটি নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের ব্যয় হয় ২৩ কোটি টাকা ।
প্রথম দু বছর সড়কটি কিছুটা ভালো থাকলেও নদীর চর থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালি উত্তোলনকারীরা তাদের যান চলাচলের সুবিধার্থে গোমতীর পাড় ভেঙ্গে দিয়েছে। এছাড়াও বালু ও মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলে বেঁড়িবাধ বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পরে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক সংস্কার না হওয়ায় স্থানীয় মানুষজন ও বাহন চালকদের কাছে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় পরিণত হয়েছে গোমতীর বেঁড়িবাধটি।
পাথর বোঝাই ট্রাক নিয়ে বিবির বাজার যাওয়ার পথে চালক জাহিদ হোসেন বলেন, এত বড় গর্ত যে কোন পাশ দিয়ে যাবো তা নিয়ে চিন্তা করি। পরে সড়কের পাশে ট্রাক থামিয়ে গর্তে নেমে পা দিয়ে দেখি কোন দিক দিয়ে যাওয়া যায়। গত এক বছর ধরে সড়কটি ভেঙ্গে ভেঙ্গে এমন অবস্থা হয়ে আছে।
দূর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সাফি বলেন, বর্ষাকালে গোমতীর পানি বেড়েছিলো। তখন বেঁড়িবাধের ভেতর ইদুরের গর্ত দিয়ে পানি চুইয়ে বের হওয়ার কারনে বিভিন্ন অংশে গোমতীর পাড় ভেঙ্গেছে। এখন সংস্কার করা খুবই জরুরী। না হয় গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি যান চলাচলে একেবারে অনুপোযোগী হয়ে যাবে।
শুধু যান চলাচলই নয়, গোমতীর সৌন্দর্য্য দেখতে আসা কুমিল্লা নগরীসহ আশেপাশের ভ্রমনপিপাসুরাও ভাঙ্গা সড়কের জন্য বিরক্ত প্রকাশ করেন।
পরিবার নিয়ে গোমতীর সৌন্দর্য্য দেখতে আসা মুহিব চৌধুরি বলেন, বুক ভরে সতেজ নিঃশ্বাস নেবো শহরে সে সুযোগ নেই। আমরা আসি গোমতীর পাড়ে। সবুজ চরে ঘুরে বেড়াতে। কিন্তু বাঁধের যে অবস্থা তাতে পরিবার নিয়ে আসতে ভয় হয়। কখন যে গাড়ি উল্টে যায়। বছর হয়ে গেলো গোমতীর বেঁড়িবাধ এখনো সংস্কার হচ্ছে না। আর কবে হবে সংস্কার ?
খানাখন্দকে ভরা গোমতীর বেঁড়িবাধ নিয়ে কুমিল্লা সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, বেঁড়িবাধের সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। সচিব মহোদয় দেশে আসলে প্রস্তাবটির অনুমোদন হবে। আমরা আশা করি চলতি অর্থবছরেই গোমতীর বেঁড়িবাধের সংস্কার কাজ শুরু করতে পারবো।