মাহফুজ নান্টু ।
মাচার ভেতর থোকায় থোকায় ঝুলে আছে টম্যাটো। কোনটা সবুজ কোনটা লাল। পলিথিনের ছায়ায় লাল সবুজের এই অপূর্ব দৃশ্য দেখা যাচ্ছে কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার হরিপুর গ্রামে।
ওই এলাকার তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মো. সোহেল মিয়া কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে প্রথমবারের মতো চাষ করেছেন গ্রীষ্মকালীন টমেটো। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া রাজস্ব খাতের অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রদর্শনীর আওতায় ৩ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন বারি টমেটো-৮ গত ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা প্রচন্ড তাপদাহে টমেটোর ঢলে পড়া রোগের চোখ রাঙ্গানি অপেক্ষা করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক।
কৃষক মো. সোহেল মিয়া বলেন, টম্যাটো চাষের সকল উপকরণ পেয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিস থেকে। নিজের টাকায় শুধু পলি টানেলের বাঁশ ও কিছু ছত্রাকনাশক কিনেছেন। সার ব্যবস্থাপনা, সেচ ব্যবস্থাপনা, রোগ ও পোকামাকড় ব্যবস্থাপনার সকল পরামর্শ কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ও উপসহকারি কৃষি অফিসার দিচ্ছেন।
কৃষি উদ্যাক্তা সোহেল মিয়া বলেন, বিভিন্ন জেলায় খোঁজ নিয়ে জেনেছি এ বছর ঢলে পড়া রোগের প্রকোপ বেশি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া তুলনামূলক আমার জমির অবস্থা ভালো।
প্রতিদিন ৮-১০ কেজি করে টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে জমি থেকেই বিক্রি হচ্ছে। আশাকরি হাজার বিশেক টাকা লাভ থাকবে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর বুড়িচং উপজেলায় প্রথমবারের মতো ৩ শতক করে ১০ টি রাজস্ব প্রদর্শনী ও উপসহকারি কৃষি অফিসারদের দ্বারা উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে আরো ৫ জন কৃষক গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। টমেটো বিক্রয় প্রায় শেষের দিকে। আগষ্ট এর শেষের দিকে ও সেপ্টেম্বরের শুরুরে পুনরায় চারা করে নভেম্বর থেকে আগাম বাজার ধরতে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন তারা। বুড়িচং উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ বেশ লাভজনক, তবে চ্যালেঞ্জিং। এ বছর প্রচন্ড তাপদাহে ঢলে পড়া রোগ ঠেকাতে আমাদের বেশ হিমশিম খেতে হয়েছে। তবে সুপরামর্শ আর পরিকল্পিতভাবে আগালে সফলতা পাওয়া সম্ভব। হরিপুর গ্রামের সোহেল মিয়া তারই প্রমাণ। আগামীতে আরো নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তা গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে এগিয়ে আসবে প্রত্যাশা করি।