রুবেল মজুমদার ।। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্রয়লার মুরগি, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। ইতিমধ্যে ট্রিপল সেঞ্চুরী উদযাপন করে সামনের দিকে আরো এগিয়ে যাচেছ কাঁচা মরিচ। শুক্রবার (১২ আগস্ট) কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০ থেকে ১৭৫ টাকা। বাজারের এই অবস্থায় নভিশ^াস হয়ে উঠছে মধ্যবিত্ত, নিম্ম মধ্যবিত্ত ও নিম্মবিত্তের জীবন। ভ্যান চালক শহিদুল মিয়া । সপ্তাহ শেষে তার আয় দুই হাজার টাকা। চার সন্তান নিয়ে বসবাস করেন নগরীর শাসনগাছার ভাড়া বাসায়। ছুটিরদিন শুক্রবার সকালে বাজার করতে আসেন নগরীর বাদশা মিয়া বাজারে । তিনি জানান, একটি ব্রয়লার মুরগি কিনতে তিনটি দোকান ঘুরলাম। ২০০ থেকে ২১০ টাকার নিচে কেউ বিক্রি করে না। অথচ গত সাপ্তাহে কিনেছি ১৭০ টাকা করে। মুরগি কিনা বাদ দিয়া গেছি ডিম কিনতে। ডিম কিনতে গিয়া হুনি ডিমের আলি( হালি) ৫০ টাকা। ক্ষুদ্ধ কন্ঠে এ ভ্যান চালক বলেন, সরকার কি আমগো রে বাঁচতে দিবো না? এভাবে জিনিসপত্র দাম বাড়লে তো আমগো না খাইয়া থাকতো অইব ? এদিকে নগরীর পদুয়া বাজার (বিশ্বরোড) এলাকা ব্রয়লারের পাশাপাশি সোনালি ও পাকিস্তানি মুরগিরও দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক ভাবে। প্রতি কেজি সোনালি ও পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩৩০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ২৭০ থেকে ২৯০ টাকা। এছাড়া নিউমার্কেট একালায় ডিমের দোকান ঘুরে দেখা যায়, প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। রামঘাট এলাকার চা দোকানদার রহমান হোসেন বলেন , ‘মুরগি, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম বেড়েছে। এভাবে দাম বাড়লে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ কীভাবে চলবো। সারাদিন চা-সিগারেট বিক্রি করে লাভ হয় ৩০০ টাকা। এ টাকা দিয়ে চাল কিনবো না তরকারি কিনবো, নাকি বাসা ভাড়া দিমু,আপনারাই বলুন।এভাবে চললে তো মরা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। রানীবাজারে বাজার করতে আসা রাবেয়া খাতুন নামের এক ইপিজেট শ্রমিক বলেন, ‘অল্প বেতনে কাজ করি, গরুর মাংসের দাম বেশি থাকায় সাধারণত ব্রয়লার মুরগি কেনা হয়। কিন্তু ব্রয়লার মুরগির দাম হাঁকছে ২১০ টাকা। শুধু মুরগি নয় সবকিছুর দামই বেশি।যা বেতন পাই, তা দিয়ে চলতে কষ্ট হয়।এভাবে চলতে থাকলে বাঁচা যাইবো না রে ভাই। বিশ্বরোড পদুয়ার বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী আব্দুর হাসেম বলেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। মুরগির খাদ্যের দাম বেশি বলে অনেকেই মুরগি পালনে অনাগ্রহী। এছাড়া গত সাপ্তাহ তেলে দাম বাড়ায়,পরিবহন ভাড়া বেড়েছে,আমদানি ও কমেছে,যে কারণে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে মুরগি পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে, গতকাল শুক্রবার নগরীর প্রতিটি বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকা থেকে ৩৪০ টাকা কেজি ধরে। খুচরা ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, আজকে ( শুক্রবার) পাইকারি বাজারে যে অবস্থা দেখছি, কাঁচা মরিচের দাম আরো বাড়বে।