তৈয়বুর রহমান সোহেল / জহিরুল হক বাবু ।। ইসির অসহায়ত্ব আর স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর শঙ্কার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশেন (কুসিক) নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা।
প্রচারণার শেষ দিনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বলেন, যিনিই নির্বাচিত হন, আমি চাইব প্রথম তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিতে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষের প্রার্থী নগরীতে কালো টাকা ছিটাচ্ছেন। নগরীতে এখন কালো টাকার ছড়াছড়ি। তিনি বলেন, বাহার ভাইতো আমার কোনো প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেননি। তবে একজন লোকের (সাক্কুর) অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেন তাকে কুমিল্লা ছাড়তে চিঠি পাঠাতে হবে? তিনি কুমিল্লার এমপি কুমিল্লাতেই থাকবেন।
এদিকে এদিন বেলা ১১টার সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর প্রথমবারের মতো নির্বাচনের সময় বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আগমন ও বর্তমানে কুমিল্লায় হত্যা মামলার আসামিরা ঘোরাঘুরি করছেন বলে অভিযোগ দায়ের করেন ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। এছাড়া ইভিএমের ফলাফল বিবরণী প্রিন্ট আকারে দেওয়ার প্রস্তাব করেন কায়সার। তিনি জানান, ইভিএম নিয়ে জনমনে শঙ্কার পরও ইসির আশ্বাসে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। প্রতি কেন্দ্রের চূড়ান্ত ফলাফলের লিখিত ফলাফলের লিখিত বিবরণীর সাথে মাস্টার ইভিএমের প্রিন্ট কপি সংযুক্ত আকারে প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে দেওয়ার অনুরোধ জানাই। এরপর শেষদিনের মতো প্রচারণায় নামেন কায়সার।
এমপি বাহার ইস্যুতে সিইসির অসহায়ত্বপূর্ণ বক্তব্যকে কেন্দ্র করে নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, আমাদের আশা ভেঙে গেছে। সিইসি যদি এতটাই অসহায় হন, তাহলে তিনি দলবল নিয়ে পদত্যাগ করুক।
প্রচারণার শেষদিনে কোনও পথসভা ও উঠান বৈঠকে অংশগ্রহণ করেননি সাবেক মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। তবে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি। এসময় তিনি নৌকার প্রার্থী রিফাতকে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী না বলে এমপি বাহারকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী বলে দাবি করেন। সাক্কু দাবি করেন, রিফাত ( নৌকার প্রার্থী) এমপি বাহারের নমিনি। তিনি সর্বশক্তি দিয়ে আমাকে ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন। আমিও জানি, তার শক্তি কতটুকু। সব বাধা ডিঙিয়ে ভোটাররা আমাকেই বিজয়ী করবে।
আগামী ১৫ জুন বুধবার অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এটি কুমিল্লা সিটির তৃতীয় নির্বাচন। কুমিল্লা সিটিতে তৃতীয় লিঙ্গের দুইজনসহ মোট ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল ৪টার মধ্যে যারা কেন্দ্রে পৌঁছাবেন সময় শেষ হলেও তারা ভোট দিতে পারবেন। ভোটগ্রহণ শুরুর আগে থেকে শেষ হওয়া পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকবে। ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি কেন্দ্রে চলবে ভোটগ্রহণ। সোমবার (১৩ জুন) মক ভোটিং অনুষ্ঠিত হয়।