আবু সুফিয়ান রাসেল ॥ কুমিল্লার বাজারে নতুন নির্ধারিত দাম থেকে ২৮ টাকা বেশি দামে খোলা সয়াবিন বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। তেল নিয়ে অনেকটা তেলেসমাতি চলছে। যে যেভাবে পারছে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। নেই কোন নিয়ন্ত্রণ। নাভিশ^াস উঠেছে মানুষের। জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন বাজারে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন গত বৃহস্পতিবার ( ৫ মে) ভোজ্যতেলের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে। এখন থেকে বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হবে ১৯৮ টাকা। আর ৫ লিটারের বোতলের দাম হবে ৯৮৫ টাকা, যেটি পূর্বে ৭৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকা, পূর্বে বাজারে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৩৬ টাকা। খোলা পাম তেল প্রতি লিটার ১৭২ টাকায় বিক্রি হবে, যা পূর্বে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছিলো।
শনিবার কুমিল্লা নগরীর রাগজঞ্জ ও চকবাজারের ৮-১০ টি দোকানে বোতলজাত তেল দেখা যায়নি। কিছু দোকানে নতুন নির্ধারিত দাম থেকেও অতিরিক্ত দাম সয়াবিন বিক্রি করতে দেখা গেছে।
রাজগঞ্জের ইত্যাদি স্টোরের মালিক মানিক মিয়া বলেন, ঈদের পর বাজারে তেলের সাপ্লাই কম। পাইকার বাজারে তেল নেই, তাই দোকানে তেল রাখতে পারি না। তিনি আরো জানান, সয়াবিনের দাম বাড়াতে সরিষার তেলের চাহিদা ও দাম বেড়েছে।
চকবাজারের তমাল কৃষ্ণ সাহা স্টোরে বোতল সয়াবিন ২০৫ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। যার সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৯৮ টাকা।
চকবাজারের এস আর রাইস এজেন্সির মালিক রিয়াজ উদ্দিন সেলিম বলেন, খোলা তেল ২০৮, পাম তেল নেই। একই চিত্র আরিশা ট্রেডার্সের, তবে এখানেও তেল সংকট। তবে সরকার নির্ধারিত খোলা তেলের মূল্য ১৮০ টাকা লিটার।
ব্যবসায়ী তমাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, সরিষার তেল ২৬০ লিটার। এখন সরিষার চাহিদা বেড়েছে। সে হিসাবে মার্কেটে তেল নেই।
চকবাজারে একমাত্র বাংলাদেশ স্টোরে পাঁচ লিটার সয়াবিন বোতল দেখা গেছে। দোকানের মালিক সানা উল্লাহ হক জানিয়েছেন, পাঁচ লিটার সয়াবিন ৯৭৫ টাকা, পাঁচ লিটার সরিষার তেল হাজার ৫০ টাকা।
জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লা জেলার সহকারি পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম বলেন,ভোজ্যতেল বিষয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা বাজার মনিটরিং করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। চলতি সাপ্তাহ থেকে বাজারে বাজারে অভিযান হবে।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সভাপতি রোকেয়া বেগম শেফালি বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমেছে। বাংলাদেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। আর কুমিল্লার ব্যাবসায়ীরা আরো বড় সিন্ডিকেট তৈরি করে মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। প্রশাসনের দায়িত্ব তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, চারদিক থেকে শুনতেছি অতিরিক্ত দামে তেল বিক্রি হচ্ছে। কর্মকর্তাগণের সাথে মিটিং করে বাজারে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।