মঙ্গল্বার ৩০ †g ২০২৩
Space Advertisement
Space For advertisement


স্ত্রীকে হত্যার পর মরদেহ ও ঘরে আগুন, অগ্নিকাণ্ডের প্রচারণা স্বামীর!


আমাদের কুমিল্লা .কম :
30.03.2022

স্টাফ রিপোর্টার ।। স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তারকে হত্যার পর তার মরদেহ ও ঘরে আগুন লাগিয়ে দেন স্বামী। কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ডেউয়াতলী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আগুন লাগিয়ে ফজরের নামাজ পড়তে যান তার স্বামী রেজাউল করিম। হত্যার ১৮ দিন পর এই রহস্য উন্মোচন করেছে র‌্যাব। তাকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তার স্বামী রেজাউল করিমকে। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব ১১ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
তিনি জানান, আমরা জানতে পারি ২০১৭ সালের শুরুতে ইয়াসমিন আক্তারের বাড়ির (চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানার ডিংগাভাঙ্গা) নিকট একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন রেজাউল করিম। ওই বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার সুবাদে রেজাউল করিমের সাথে ইয়াসমিনের মা বেবী আক্তারের পরিচয় হয়। সেই সুবাদে আসামি রেজাউল করিম ঋণের কিস্তির টাকা নিতে ইয়াসমিনদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন। আসা যাওয়ার একপর্যায়ে ইয়াসমিন আক্তারের সাথে রেজাউল করিমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের প্রেমের সম্পর্কটি এলাকায় জানাজানি হলে ইয়াসমিনের আগের স্বামী আনোয়ার হোসেনের সাথে তার তালাক হয়ে যায়। পরে কোন কাবিন না করেই রেজাউল করিম ইয়াসমিন আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ে করে তিনি মালদ্বীপ চলে যান।
পরবর্তীতে গত ৭ জানুয়ারি রেজাউল মালদ্বীপ থেকে দেশে ফিরে আসেন। পরিবারের অমতে গত ১০ জানুয়ারি রেজাউল করিম ইয়াসমিনকে তার বাড়ি বরুড়ার ডেউয়াতলী গ্রামে নিয়ে আসেন। রেজাউলের পরিবারের অমতে বিয়ে, অপর দিকে যৌতুকের চাপের কারণে তাদের পারিবারিক কলহ চরমে ওঠে।
রেজাউলের বরাত দিয়ে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, গত ১০ মার্চ বিকেলে স্বামীর সাথে ইয়াসমিন আক্তারের বিভিন্ন বিষয়ে কথা কাটাকাটি হলে স্বামী রেজাউল তাকে চড়থাপ্পড় দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যান। রাত ১০টার সময় রেজাউলের বাবা-মা ঘুমিয়ে গেলে পুনরায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রেজাউল ইয়াসমিন বেগমের গলায় দুই হাত দিয়ে চেপে ধরলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তার কিছুক্ষণ পরে রেজাউল গায়ে হাত দিয়ে দেখে তার স্ত্রীর শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আছে। একপর্যায়ে ১১ মার্চ ভোর ৫ টার দিকে সে তার স্ত্রী মৃত ইয়াসমিন আক্তারের সারা শরীরে ও ঘরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। ঘর থেকে বের হয়ে ফজরের নামাজ পড়তে চলে যায়। পরে স্থানীয়দের আগুন নেভানোর সময় রেজাউল ও তাদের সাথে আগুন নেভানোর ভান করতে থাকে। বলতে থাকে ঘরের ভিতর তার স্ত্রী ও তার বিদেশ যাওয়ার সকল কাগজপত্রসহ টাকা-পয়সা রয়েছে। বিষয়টি বলতে বলতে রেজাউল জ্ঞান হারানোর ভান ধরে। পরে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। ইয়াসমিনের পরিবার এই বিষয়ে বিভিন্ন স্থানে কথা বলা শুরু করলে সে হাসপাতাল হতে সে আত্মগোপনে চলে যায়।