মঙ্গলবারও থাকবে বৃষ্টি
মাহফুজ নান্টু ।
কুমিল্লার আকাশ। রবিবার সকাল থেকে মুখ গোমড়া। সূর্যের দেখা নেই। বেলা সাড়ে ১২ টা। শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। অপ্রত্যাশিত এমন বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়ে নগরবাসী। খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজকে প্রসারিত করে বৃষ্টি চলতেই থাকে। সোমবার দিনভরও ঝরেই চলছে বৃষ্টি। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে যে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে তা আজ মঙ্গলবারও থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
সোমবার সকাল ৯ টা। নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে ছিলো না যানবাহনের চাপ। কাজ সেরেই যে যার গন্তব্যে ছুটছেন। কাকভেজা হয়ে বাড়ি ফিরেছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা।
তবে ডিসেম্বরের এই বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগর কুমিল্লার নিম্নআয়ের মানুষজন।
নগরীর কান্দিরপাড় টাউনহলের সামনে শিশুদের কাপড় বিক্রি করেন অহিদুল মিয়া। বাড়ি পঞ্চগড়। গত ১০ বছর ধরে নগরীর অশোকতলায় থাকেন। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে তার বাঁশের তৈরি দোকানটি পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে নেন।
অহিদ বলেন, আইজ দুই দিন সূর্যের দেহা নাই। বাপু আইজ আবার আইলো মেঘ। আইজ আর ব্যবসা অইলো না।
ভ্যানে করে ফল বিক্রি করেন তুহিন মিয়া। বাড়ি নগরীর ছাতিপট্টিতে। তুহিন বলেন ডিসেম্বর মাসে মেঘ হইতে দেখছি না। হুনলাম সাগরে অহন ঘূর্ণিঝড় উঠছে। মেঘের লাইগ্গা বেচা নাই। আল্লায় জানে কয়দিন থাহে মেঘ।
বিকেল ৫ টা। নগরীতে নানান প্রয়োজনে আসা সাধারণ মানুষজনও পড়েছেন বিপাকে। কাজ শেষ করে কাকভেজা হয়ে বাড়িতে ফিরতে হয়েছে। পাশাপাশি গুণেছেন দ্বিগুণ ভাড়া।
জেলার মুরাদনগর উপজেলা থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সেবা নিতে এসেছেন আবদুল গফুর। তিনি বলেন, সকালে আকাশে মেঘ ছিলো। দুপুরে বৃষ্টি শুরু হইলো। আজ সড়কে রিক্সা কম। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শাসনগাছা বাসস্ট্যান্ডে যেতে ২০ টাকার রিক্সা ভাড়া। শুধু বৃষ্টির কারণে আজ ৪০ টাকা দিতে হলো।
তবে রিক্সা অটোরিকশা চালকরা জানান, এই বৃষ্টিতে ভিজে রিকশা চালানো কষ্টের। তাই একটু ভাড়া বেশী নিচ্ছেন।
এদিকে রোববার দুপুর থেকে চলা বৃষ্টি সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলো। বৃষ্টির কারণে সন্ধ্যার পর থেকে জনশূন্য হতে থাকে নগরীর প্রধান সড়ক ও ফুটপাথগুলো।
কুমিল্লা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন ভূইয়া জানান, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে যে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে তা মঙ্গলবার পর্যন্ত থাকবে। বুধবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছি।