শুক্রবার ২৯ gvP© ২০২৪
Space Advertisement
Space For advertisement


শসা চাষে তিন লাখ টাকা মুনাফা


আমাদের কুমিল্লা .কম :
05.12.2021

মাহফুজ নান্টু ।

উত্তরের হিমেল হাওয়া বইছে। মাঠে ব্যস্ত চাষীরা। মাচায় ঝুলছে শসা। কেউ শসা সংগ্রহ করছেন। কেউবা সেই শসাগুলো একসাথে জড়ো করছেন। বাড়িতে অপেক্ষা করা পাইকাররা মেপে মেপে গাড়ি বোঝাই করছেন। এমন দৃশ্য কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বলারামপুর গ্রামের। ওই এলাকার যুবক কাজী আনোয়ার হোসেন। স্বল্পকালীন জাতের শসা চাষ করেছেন। বাম্পার ফলন হয়েছে। ।
মাত্র তিন মাসেই শসা বিক্রি করে তিন লাখ টাকা মুনাফা করেছেন। তাই আনোয়ারের মুখে তৃপ্তির হাসি।
এর আগেও আনোয়ার হলুদ তরমুজ ও মরুর ফল সাম্মাম চাষ করে সফল হয়েছেন। মুদি দোকানি থেকে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়া আনোয়ার এখন কৃষিতেই নিজের জীবনে স্বচ্ছলতা এনেছেন।
আনোয়ার হোসেন জানান, সেপ্টেম্বরের শুরুতে ১৮০ শতক জমিতে শসার বীজ রোপণ করেছেন। চারা যখন মাটি ভেদ করে আকাশে উঁকি দেয় তখন মাচা তৈরি করেন। প্রতিদিনই তরতর করে বেড়ে উঠে শসা গাছ। মাচায় আকড়ে ধরে ফুল দেয় শসা গাছগুলো। সেই ফুল থেকে শসা হয়। তবে বুলবুলি, দোয়েল ও শালিক পাখি অনেক শসা নষ্ট করেছে বলো চোখেমুখে বিরক্ত প্রকাশ করেন।
আনোয়ার জানান, জমি তৈরি, বীজ সংগ্রহ ও সার মিলিয়ে তার খরচ হয় এক লাখ টাকা। পোকামাকড় দমনে সেক্স ফেরোমন ও আলোর ফাঁদ তৈরি করেছেন। তাই তার শসাগুলো স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ।
আনোয়ার বলেন, আমি ১৮০ শতক ক্ষেতে শসা লাগাইছি। দশ হাজার কেজি শসা বেচ্চি। অহনে যেই শসা আছে আরো পোনরো দিন বেচতাম পাইরাম। মনে অয় আরো পাঁচশ থেকে এক হাজার কেজি শসা বেচন যাইবো।
আনোয়ার আরো বলেন, সব মিল্লা আমার খরচ অইছে চাইর লাখ। খরচ একলাখ বাদ দিয়া আমার তিন লাখ টেকা লাভ হইছে।
নগরীর রাজগঞ্জ থেকে পাইকাররা আসেন আনোয়ারের বাড়িতে। ৪০ টাকা দরে তারা শসা কিনে নেন। বাজারে সেই শসা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন পাইকাররা ব্যবসায়ীরা।
আবদুল কাদের নামে রাজগঞ্জ বাজারের এক পাইকার জানান, আনোয়ারের স্বল্পকালীন জাতের শসা স্বাদে ভালো। গত এক মাসে অনেক বিয়েশাদির অনুষ্ঠান ছিলো। ক্রেতারা আমাদের কাছে দুই মন তিন মন করে শসার অর্ডার করতো। আমরা আনোয়ারকে জানাতাম। পরে গাড়ি নিয়ে সেই শসা নিয়ে আসি। আমরা ৪০ টাকা কেজি দরে এনে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করতাম।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান জানান, আনোয়ার হোসেন একজন কৃষি উদ্যোক্তা। নতুন কৃষি ফসল উৎপাদনে আনোয়ারের জুড়ি নেই। চলতি বছরের শুরুতে হলুদ তরমুজ, ব্ল্যাকব্যারি জাতের তরমুজ ও মরুর ফল সাম্মাম চাষ করে সফল হয়েছেন। আনোয়ার যখনই কোন সমস্যায় পড়ে তখনই কৃষি অফিস থেকে তাকে সহযোগিতা করা হয়। আসলে আনোয়ারের মত সব কৃষকদের যেকোন ধরনের পরামর্শ দিতে কৃষি অফিস বদ্ধপরিকর।