মহিউদ্দিন মাহি, কুবি।।
চারদফা মেয়াদ বাড়িয়ে চলতি বছরের শেষে কর্তৃপক্ষকে নির্মাণকাজ বুঝিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সম্প্রসারিত অংশের। তবে তার দু’মাস আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে নির্মাণাধীন ভবনের বিভিন্ন অংশে। কাজ শেষ হওয়ার আগেই এমন ফাটলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের মান ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।শনিবার হলের নির্মাণাধীন সম্প্রসারিত অংশ ঘুরে দেখা যায়, রিডিং রুমের সাথে সংযুক্ত করিডোর, দেয়াল ও দরজার ওপরের অংশে বিশাল আকারের কয়েকটি ফাটল রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে হাত দেওয়ার সাথে সাথে খসে পড়ছে পলেস্তরা ও কংক্রিট। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই এমন ফাটলে বিস্মিত বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
রফিক আলম নামে এক শিক্ষার্থী প্রশ্ন রেখে বলেন, কতটা নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করলে কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভবনে ফাটল দেখা দিতে পারে। কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকির অভাবেই এমন ঘটনা ঘটছে।’
তবে ঘটনাটিকে ফাটল নয় দাবি করে কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্টার লাইট সার্ভিস লিমিটেডের কর্ণধার আমির হোসেন মিলন বলেন, ‘এখানে দুই ভবনের গ্যাপ না থাকায় এমন হয়েছে। শ্রমিকরা আলাদা না রেখে সংযুক্ত করে দিয়েছে তাই ফাটল মনে হচ্ছে। প্লাস্টার করার সময় শ্রমিকেরা বালি বেশি দিয়ে দিলেও এমন হয়। আমি শ্রমিক পাঠাচ্ছি, ঠিক করে দেওয়া হবে।’
এদিকে, ১৫ মাসে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার শর্তে ২০১৬ সালে ১৩ কোটি ১৪ লাখ টাকার প্রকল্পটির কার্যাদেশ পায় প্রতিষ্ঠানটি। তবে কাজ শুরুর সাড়ে ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। চারদফা সময় বৃদ্ধি করে সর্বশেষ গত জুন মাসে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ঠিকাদরি প্রতিষ্ঠানটি। তবে এখনো ৩০ শতাংশ কাজ শেষ না হওয়ায় কবে নাগাদ এ হল ব্যবহার করা যাবে তা জানেন না ঠিকাদারসহ কেউই।
বিষয়টিকে কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষার্থীরা। রবিউল ইসলাম নামে ৪র্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘১৫ মাসের কাজ শেষ হয়নি ৬৫ মাসেও। অথচ প্রশাসন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তাদেরকে তোয়াজ করে যাচ্ছে, মনে হচ্ছে প্রশাসন তাদের কাছে ঠেকে গিয়েছে।’
প্রকৌশল দপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এসএস শহিদুল হাসান বলেন, ‘নতুন ভবনে এভাবে ফাটল হওয়ার কথা নয়। আমরা প্রকৌশলী পাঠাবো এবং ঠিকাদারের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। দরকার হলে নতুন দেয়াল করে দিতে বলবো ঠিকাদারকে। ভবনে কোন ধরনের ফাটল থাকলে আমরা তা গ্রহণ করব না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, বিষয়টি আমরা জানতাম না। এখন যেহেতু অবগত হয়েছি, আমরা রোববার গিয়ে দেখবো এবং ঠিকাদারের সাথে কথা বলব।’
তবে এ বিষয়ে মন্তব্য নিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিক ফোন করা হলেও তিনি এ প্রতিবেদকের কল রিসিভ করেননি।