প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে
স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার বরুড়া বাজারের বেসরকারি চিকিৎসালয় ফেয়ার হসপিটালের চিকিৎসক ও প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে ওই হাসপাতাল ভাঙচুর, পরিচালকদেরকে মারধর ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে তার সহযোগীরা হাসপাতালে তাণ্ডবলীলা চালায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বরুড়া উপজেলার হেরপেটি গ্রামের মৃত আব্বাস আলীর পুত্র। তিনি নোয়াখালীর চৌমুহনী পৌরসভার মিরওয়ারিশপুরে অবস্থিত আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে কর্তরত আছেন। কুমিল্লার বরুড়া বাজারে অবস্থিত ফেয়ার হসপিটালে মোটা অংকে বেতনভুক্ত হয়ে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত ফেয়ার হসপিটাল কর্তৃপক্ষের সাধারণ সভায় হাসপাতালের চিকিৎসক ও প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের কাছে রক্ষিত প্রায় ত্রিশ লাখ টাকার হিসাব চান পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। এ নিয়ে ইকবাল ও পরিচালকদের মাঝে বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালেহ উদ্দিনকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে ইকবাল ও তার সহযোগীরা। এছাড়া তিনি তার ১০/১৫জন বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে ভয় ভীতি প্রদর্শন করেন। এতে হাসপাতালের রোগী ও উপরের ভাড়াটিয়ারা আতংকিত হয়ে পড়েন।
ফেয়ার হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সালেহ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘ ইকবাল আমাদের হাসপাতালের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। এ সুবাদে তার কাছে হাসপাতালের ত্রিশ লাখ টাকা রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিটিং-এ আমরা তার কাছে ওই টাকার হিসাব চাইলে তিনি হিসাব দেখাতে ব্যর্থ হয়ে তার সহযোগীদেরকে সঙ্গে নিয়ে আমাদেরকে মারধর করেন, হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষ ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন এবং হাসপাতালের ক্যাশ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার ড্রয়ার থেকে আড়াই লাখ টাকা লুট করেন। এছাড়া তিনি তার ১০/১৫জন বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে ভয় ভীতি প্রদর্শনে ত্রাস সৃষ্টি করেন। এতে হাসপাতালের রোগী ও উপরের ভাড়াটিয়ারা আতংকিত হয়ে পড়েন। এমনকি সন্ত্রাসী তান্ডব ও লুটপাটের প্রমাণ লোপাটের জন্য হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরা ও কম্পিউটারও ভাঙচুর করেছেন। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে তাণ্ডবলীলা চালালেও তার অফিস কক্ষ অক্ষত রেখেছে। ইকবাল ও তার সহযোগীরা হাসপাতালের পরিচালক ও স্টাফদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ বিষয়ে ফেয়ার হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সালেহ উদ্দিন ভূঁইয়া, অর্থপরিচালকের ছেলে ডা. কাজী শিহাব উদ্দিন এবং ভুক্তভোগী জান্নাতুল ফেরদৌসের পিতা মোঃ সাহেব আলী বাদী হয়ে বরুড়া থানায় পৃথক পৃথক ভাবে তিনটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ’
বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, ‘ হাসপাতালের পক্ষে তিনটি ও ইকবালের পক্ষে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’