মঙ্গল্বার ১৯ gvP© ২০২৪
Space Advertisement
Space For advertisement


কুমিল্লার ঘটনায় অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত


আমাদের কুমিল্লা .কম :
15.10.2021

কুমিল্লায় পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে ডা.জাফর উল্লাহ চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার।।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, কুমিল্লার পূজামণ্ডপের এই ঘটনার সাথে ‘র’সহ দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা জড়িত রয়েছে। সরকারের পায়ের নিচে এখন মাটি নেই।তাই সরকার ইচ্ছে করেই ফায়দা লুটার জন্য এই জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে। পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা দিতে না পারার জন্য অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করে আগামী দুই বছরের জন্য জাতীয় সরকার গঠনের কথা বলেন দেশের প্রবীণ এই বুদ্ধিজীবী। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কুমিল্লা নগরীর নানুয়া দিঘীরপাড়স্থ ঘটনাস্থল ভাঙচুরকৃত পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করতে এসে এ কথা বলেন তিনি।
ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রতিমা বিসর্জনের আগেই প্রতিমাকে ভাঙচুর করা চরম দু:খজনক ঘটনা। দেশের ইতিহাসে এই ধরনের ঘটনা আর ঘটেনি। ভাটেশ^রী থেকে চট্টগ্রাম এর পর কুমিল্লা সব জায়গায়ই নিরাপত্তা দিতে পরিপূর্ণভাবে সরকার ব্যর্থ।
ডা. জাফর উল্লাহ পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পূজামণ্ডপে উপস্থিত হওয়ার পরেও কীভাবে মণ্ডপ ভাঙচুর হলো, শহরে হামলার ঘটনা ঘটল। এর দায় পুলিশকেও নিতে হবে। পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ ও পরবর্তীতে মণ্ডপ ভাঙচুরের ঘটনা সরকার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ঘটিয়েছে। সরকার বুঝে গেছে দেশে তাদের পায়ের তলায় কোন মাটি নেই। এই ঘটনা সরকার অন্য কোন উদ্দেশ্য ঘটাতে পারে। তিনি বলেন, সরকার বলছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকলে পুলিশ দিয়ে কেন মন্দির পাহারা দিতে হবে। তিনি মন্দিরে হামলার জন্য দেশের সকল মুসলমানদের পক্ষ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে ক্ষমা চান।
ডা. জাফর উল্লাহ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জনসমক্ষে তা প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে বলেন, এই ঘটনায় যাতে সাধারণ মানুষকে হয়রানি না করা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাফর উল্লাহ বলেন, সরকার বলছে এই ঘটনায় বিএনপি জামায়াত জড়িত থাকতে পারে। আরে বিএনপির তো হাঁটার মতো কোন ক্ষমতাই নেই। তাদের তো কোমরে শক্তি নেই। তারা কীভাবে এই ঘটনা ঘটাবে?
সরকার দেশের মাদরাসাগুলোকে ৫ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। যখন দেখছে টাকা দিয়েও মাদরাসাগুলো তাদের কথা শুনছে না। তখন কৌশল করে তাদেরকে জেলে পাঠিয়েছে। এখনো অনেক আলেম জেলে রয়েছে, জামিন পাচ্ছে না।
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেছেন, কুমিল্লার নানুয়া দিঘির পাড়ের এই পূজামণ্ডপে পুলিশ উপস্থিত হওয়ার পরেও কীভাবে হামলা হলো তা খতিয়ে দেখতে হবে। কক্সবাজারের রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও কুমিল্লার নানুয়া দিঘির পাড়ের ঘটনা সবই একই সূত্রে গাথা এবং প্রতিটি ঘটনার সাথেই সরকার জড়িত।আজ পর্যন্ত কোন ঘটনার বিচার হয়নি। বরং যারা এহেন কাজ করেছে তাদের ইউপি নির্বাচনে সরকার মনোনয়ন দিয়েছে। সরকার দেশকে বিভাজন করার হীন উদ্দেশ্যে কাজ করছে। সরকারের মদদেই কুমিল্লার পূজা মণ্ডপগুলোতে হামলা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। সরকার ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা করছে।
ভাষানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেছেন, সরকারের ব্যর্থতার কারণেই কুমিল্লায় এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। সরকার যদি আগে থেকেই সোচ্চার থাকত তাহলে এই ধরনের ঘটনা এড়ানো যেত।
উল্লেখ্য-গত ১৩ অক্টোবর বুধবার ভোরে কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘিরপাড়ের একটি দুর্গাপূজার মণ্ডপে মূর্তির পায়ের ওপরে কোরআন শরিফ রাখার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মণ্ডপে ভাঙচুরসহ ধাওয়া পাল্টা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে।এতে প্রায় শতাধিক লোক আহত হয়।
এসময় নঈম জাহাঙ্গীর, ইশতিয়াক আজিজ ঊলফাত, ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে তারা নগরীর দেশওয়ালীপট্টি, কাপড়িয়াপট্টি ও ঘোষগাঁও গ্রামের পূজামন্ডপ ও পরিদর্শন করেন ।