মাসুমুর রহমান মাসুদ, চান্দিনা
চান্দিনা উপজেলার বসন্তপুর গ্রামে মাদ্রাসা ছাত্রী সালমা আক্তার (১৪) হত্যাকাণ্ডে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকার তথ্য। হত্যার পরিকল্পনা হয় মেয়েটির উকিল নানা আবদুর রহমান এর ঘরে। ১ অক্টোবর রাতে পরিকল্পনা করার সময় উপস্থিত ছিলেন মেয়েটির পাষন্ড পিতা মো. সোলেমান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চান্দিনা থানার এস.আই সুজন দত্ত জানান, পূর্বের জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ ভাতিজাদেরকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হয়। আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করেন সোলেমান এর উকিল শ্বশুর আবদুর রহমান। আগেই নির্ধারণ করা হয় হত্যার পর কাকে কাকে আসামী করা হবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ১ অক্টোবর রাতেই পিতা মো. সোলেমান ও তার ৬ জন সহযোগী মিলে সালমা আক্তারকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন। সবাই মিলে মেয়েটির লাশের গলা কেটে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুড়িকাঘাত করে জখম করেন। পরে লাশ পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলে দেন। ২ অক্টোবর বাড়ির ৫০০ গজ দূরবর্তী ওই পুকুর থেকে মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেন্সিক বিভাগে পাঠায় পুলিশ।
এদিকে হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশ গ্রহণ করে মেয়েটির বাবা ও ২ চাচা সহ ৭ জন। এরা হলেন- বসন্তপুর গ্রামের মৃত আদম আলীর ছেলে মেয়েটির বাবা মো. সোলেমান এবং তার ২ ভাই মো. বাতেন ও লোকমান। অন্যরা হলেন- বসন্তপুর গ্রামের মৃত শরবত আলীর ছেলে মেয়েটির উকিল নানা আবদুর রহমান (৬০) ও তার ভাই আবুল হোসেন, মৃত অলি মিয়ার ছেলে মো. খলিল (৪২) এবং প্রতিবেশী মো. ছফিউল্লাহ্।
পুলিশ জানায়, ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানন্দীতে গ্রেফতার হওয়া আবদুর রহমান ও খলিল হত্যাকান্ডের পূর্ণ বিবরণ দিয়েছেন।
অপরদিকে হত্যার পর পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে ২ অক্টোবর পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করে। বিকেলে মেয়েটির দাফন শেষে ঘাতক পিতা মো. সোলেমান নিজেই বাদি হয়ে চান্দিনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলা তদন্তে গেলে বাদি ও স্বাক্ষীদের কথায় মিল না থাকায় এবং ভিন্ন ভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করায় সন্দেহ হয় পুলিশের। সন্দেহের সূত্র ধরেই হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয় পুলিশ।