শাহাজাদা এমরান।।
কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-১ এর আদালত কার্যক্রম চলছে ব্যবহার অনুপযোগী পুরনো জরাজীর্ণ ভবনে। স্বয়ং বিচারকের খাস কামরা হয়ে উঠেছে পোকা-মাকড়ের ঘর বাড়ি। সামান্য বৃষ্টি হলেই ফ্লোর পানিতে ভিজে উঠে। বৃষ্টির পানিতে আদালতের এজলাস কক্ষ, বিচারকের খাস কামরার দেয়ালগুলো ভিজে স্যাঁত স্যাঁতে হয়ে যায়। প্রায় প্রতিটি দেয়ালে ফাঙ্গাস পড়ে আছে।
ভুক্তভোগী আইনজীবীরা জানান, কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক ও জেলা জজ আব্দুল্লাহ আল মামুনের রুমের অবস্থা খুবই শোচনীয়। ড্যাম ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। শুরু হয়েছে বিধ্বংসী উইপোকার আক্রমণ। এ কারণে এই আদালতের অনেক মূল্যবান মামলার নথি সংরক্ষণ করা দূরহ হয়ে পড়েছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল -১ এর আদালত ভবনটি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত। স্বাভাবিক ভাবেই দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় পুরো ভবনটিই এখন বিচার কার্য চালানোর অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ভবনটি কুমিল্লা আদালতের প্রথম দিকের ভবন। এ ভবনের সৌর্ন্দয্য, নান্দনিক ঐতিহ্যবাহী অবয়ব আদালত পাড়ায় এখনো আলো ছড়ায়।
এক সময় এই ভবনটিকে ঘিরেই জেলার সকল বিচার কার্যক্রম চলেছে। সময়ের প্রয়োজনে আদালতের সংখ্যা বেড়েছে, একাধিক বহুতল আদালত ভবন নির্মিত হয়েছে। কিন্তু আদালত অঙ্গনের সবচাইতে পুরানো ভবনটি যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শ্রী হারাতে বসেছে। জগন্নাথ ট্র্র্যাজেডির মতো দূর্ঘটনা যেকোন সময় ঘটতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুমিল্লা আদালতের এক প্রবীণ আইনজীবী বলেন, কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিজ্ঞ বিচারক ও জেলা জজ আবদুল্লাহ আল মামুন স্যারের রুমে বিশেষ এক কাজে গিয়েছিলাম। রুমে গিয়ে দেখি বৃষ্টির পানি পড়ে স্যারের রুমের পুরো ফ্লোর ভিজে স্যাঁত স্যাঁতে হয়ে আছে। আর পানিতে ভিজে দেয়াল গুলোতে বেড়ে উঠেছে ফাঙ্গাস। উইপোকার প্রবল আক্রমণে স্যারের রুমের বই পত্র, গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথি নষ্ট হয়ে গেছে। মনে হয় না যে, একজন সম্মাণিত বিজ্ঞ বিচারক মহোদয়ের খাস কামরায় আছি, এটি এখন পোকা মাকড়ের ঘর বাড়ি।
স্যার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক হলেও স্যারের পদ মর্যাদা হলো জেলা জজ। স্যারের মত একজন সিনিয়র বিচারকের অফিস এত জীর্ণ-শীর্ণ হবে তা কল্পনাও করা যায় না।
এই ভবনে বিভিন্ন আদালতে কাজ করেন, এমন একাধিক স্টাফের সাথে কথা বললে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা খুব ভয়ে আছি, ড্যাম ও স্যাঁত স্যাঁতে ভবনে মামলার মূল্যবান নথি সংরক্ষণ করা দুরহ হয়ে পড়ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সাত্তার বলেন, বিষয়টি বিচারক মহোদয় আমাদের অবহিত করেছেন। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই ভবনের প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ করে দেব ইনশাআল্লাহ।