বৃহস্পতিবার ২৮ gvP© ২০২৪
Space Advertisement
Space For advertisement
  • প্রচ্ছদ » sub lead 3 » অব্যাহত হামলা মামলা ভাংচুর ও গ্রেফতারে বিপর্যস্ত বিএনপি নেতাকর্মীরা


অব্যাহত হামলা মামলা ভাংচুর ও গ্রেফতারে বিপর্যস্ত বিএনপি নেতাকর্মীরা


আমাদের কুমিল্লা .কম :
26.12.2018

একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বাচনী হালচাল কুমিল্লা সদর-৬

 

স্টাফ রিপোর্টার: আর মাত্র তিনদিন। তারপরেই অনুষ্ঠিত হবে একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর থেকেই কুমিল্লা সদর-৬ আসনে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের ধারাবাহিকভাবে হামলা-মামলা,ভাংচুর আর হুমকি ধমকিতে বিপর্যস্ত প্রায় দলটির প্রার্থী ও নেতাকর্মীরা। নির্বাচন কমিশন লেবেল প্লেয়েং ফিল্ড তৈরীর করার মাধ্যমে অবাধ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সেনা মোতায়েন করলেও পরিস্থিতির এতটুকু পরিবর্তন নেই কুমিল্লা সদর আসনে। জনসংযোগ ও প্রচার-প্রচারনায় কোন সুযোগই পাচ্ছে না দলটির নেতাকর্মীরা। নির্বাচন কমিশন-জেলা রির্টানিং অফিসার ও আইনশৃংখলা বাহিনীর কাছে দফায় দফায় লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেও কোন সুফল পাচ্ছে না বিএনপির প্রার্থী-কর্মী সমর্থকরা। আর এ কারনে অবাধ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় রয়েছে সদর আসনের সাধারণ ভোটাররা।

গত ২৪ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যা। সিটি করর্পোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড মনোহরপুর মাতৃভা-ারের সামনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রচারনা চলছিলো। এ সময় হঠাৎ করেই নৌকা সমর্থিত একদল দূর্বৃত্ত জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণার ব্যবহৃত গাড়ি (কুমিল্লা থ ১১-৫১৮৪)উপর হামলা চালায়। এ সময় গাড়ি চালক ও তার সহযোগিদের মারধর করে। ভেঙ্গে চুরমার করা হয় গাড়িটি। দূর্বৃত্তরা ছিনিয়ে নিয়ে যায় প্রচার মাইক,মেশিন ও মাইক্রোফোন।

গতকাল ২৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার। নগরীর পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় প্রচারনাকালে একদল অজ্ঞাত দূর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে প্রচারনায় ব্যবহৃত মাইক,মাইক্রোফোনসহ সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

একই দিন সদর আসনের ৫ নং পাঁচথুবী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ইকবাল হোসেন বাহালুল ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান, রাফি, রাজুর নেতৃত্বে জসিম, দেলোয়ার হোসেন (বাপ্পী), ইয়াসিন, আবীর, মনির, রবিন, কুদ্দুস, ফয়সাল, সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০জন মুখোশধারী, হেলমেট পড়ে একদল দূর্বৃত্ত বিএনপির নেতা কর্মীদের বাড়ীঘর ভাংচুর ও ককটেল নিক্ষেপ করে বাড়িতে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় এখন চরম আতংক বিরাজ করছে।

একই দিন দুপুরের পর ওই এলাকার বসন্তপুর গ্রামে একদল সন্ত্রাসী অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দোকানী সেলিমকে চলে যেতে বলে। অস্ত্রেও ভয়ে দোকানী সেলিম পালিয়ে গেলে তার দোকান ভাংচুর লুটপাট করা হয়।

সকাল দুপুর ও বিকেলে একের পর এক হামলায় পুরো পাঁচথুবী ইউনিয়নজুড়ে আতংকিত হয়ে পরে বিএনপির ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যায় পাঁচথুবী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ জহিরুল হকের বাড়িতে একদল সন্ত্রাসী প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে বাড়ির লোকদেরকে। এ সময় সন্ত্রাসীদের তর্জণ গর্জনে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পরে পরিবারের সদস্যরা।

এ ঘটনার একটু পরেই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন বাহালুল বিএনপি নেতৃত্বে মাহাবুব আলমকে গোলাবাড়ী চৌমুহনী থেকে ডেকে নিয়ে অনেক মারধর করে। পরে মারধরে আহত বিএনপি নেতা মাহবুবকে ডিবি পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

এছাড়াও ওই ইউনিয়নের কেরানীনগর উত্তর পাড়ার লিটন এর বাড়ি ভাংচুর করে। বাসাবাড়ীতে ককটেল বিস্ফোরণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পাঁচথুবী ইউনিয়ন বিএনপি এর সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেনের বাড়িও ভাংচুর ও ককটেল নিক্ষেপ করে।

বিএনপি নেতা মোঃ হুমায়ুন কবীর ভূইয়ার বাড়ির দুইটি বিল্ডিং এর থাইগ্লাস সম্পূর্ণরূপে ভেঙ্গে ফেলে সন্ত্রাসীরা। ইউনিয়নের শীবের বাজারে মোঃ গোলাম হোসেন এর দোকানে ঢুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ও দোকান ভাংচুর করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ইউনিয়নের ধনঞ্জয় গ্রামের কাঠ মিস্ত্রি চারু মিয়াকে দোকান থেকে ডেকে বাইরে এনে বেদম মারধর করে। সুবর্ণপুর গ্রামের নেয়ামত উল্লাহর বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও ককটেল নিক্ষেপ করে। শাহাপুর গ্রামের লিটনের বাড়িতে ভাংচুর ও ককটেল নিক্ষেপ করে। ইটাল্লা গ্রামের মোকলেস মাস্টারের বাড়িতে ঢুকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ও হুমকী প্রদান করে। একই গ্রামের আব্দুল বারেক লিটন ও কাশেমের বাড়িতে ভাংচুর করে এবং কাশেমের মুখের ভিতর রিভলভারের নল ঢুকিয়ে তাকে মেরে ফেলার হুমকী দেয়।

রামচন্দ্রপুর গ্রামের কবীর মিয়ার বাড়িতে গত ২৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে ৫০-৬০ জন মুখোশধারী আওয়ামী সন্ত্রাসী প্রবেশ করে ব্যাপক ভাংচুর করে এবং ফাঁকা গুলি করে ।

একই সময় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাড়িতে ঘরে হামলা চালায়। এ সময় ঘরের আসবাব ভাংচুর করে ঘরে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। মোঃ মামুনকে রাতে সদর দক্ষিণ মডেল থানার পুলিশ তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়।

এদিকে আদর্শ সদর উপজেলা পরিষ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল এর ভাই চপল এর নেতৃত্বে ২০/২৫জন নৌকা সমর্থিত আওয়ামী সন্ত্রাসী ৩নং দক্ষিণ দুর্গাপুর ইউনিয়ন এর ধর্মপুর পশ্চিম চৌমুহনীতে কেন্দ্রীয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাবেরা আলাউদ্দীন হেনার বাড়িতে হামলা চালিয়ে

ভাংচুর করে এবং বাড়িতে থাকা পরিবারের সদস্যদের বের করে দেয়া হয়। এসকল ঘটনায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি জসিমুদ্দীন এর বাড়ির দরজা জানালা ভাংচুর করে ও ঘরের ভেতরে তা-ব চালায়। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ তাজুল ইসলাম এর শাকতলাস্থ গ্রামের বাড়িতে ভাংচুর করে।

১৯ নং ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা রহিম এর বাড়িঘর ভাংচুর করে ও লুটপাট চালায়।

এদিকে গত ২২ ডিসেম্বর ৩নং ওয়ার্ডের শাসনগাছায় সোহেল রানার মাছের প্রজেক্টের মাছগুলো নিয়ে যায় এবং যাবার সময় দুটি ঘর লুটপাট করে আগুন লাগিয়ে দেয়। তাকে মেরে ফেলার হুমকী প্রদান করে।

হয়রানিমুলক আটকঃ

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ৪নং আমড়াতলী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাসমঙ্গল গ্রামের ধানের শীষ প্রতীকের কর্মী মোঃ মামুন, কাউসার,১নং কালীরবাজার ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড এরমোঃ মিজানুর রহমান বাবুল (৫০), ৬নং জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বারপাড়ার তোফায়েল আহমেদ, ৫নং পাঁচথুবী ইউনিয়নের রাচি গ্রামের জাহাঙ্গীর মেম্বারের দুই ছেলেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিনা ওয়ারেন্টে আটক করে কোতয়ালী মডেল থানায় নিয়ে যায়।

এছাড়া নগরীর ৩নং ওয়ার্ড রেইসকোর্স এলাকা হতে আশরাফুজ্জামান পিয়াল, মোঃ পাভেল, এবং শাসনগাছা হতে মোঃ সৈকত, আসিফ সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কাউসার, নাছির, রাশেদ, মোমিনুল হক ভূঁইয়া, রিপন, হোসেন, যোবায়ের, মাহাবুব, কাদের ইকবাল সহ ১৫/২০জন নেতা-কর্মীকে বিনা ওয়ারেন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরে নিয়ে যায়।