শুক্রবার ২৯ gvP© ২০২৪
Space Advertisement
Space For advertisement


ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় আটকে আছে টোরাগড় সেন্দ্রা-বড়কুল ব্রিজ


আমাদের কুমিল্লা .কম :
14.07.2018

চাঁদপুর প্রতিনিধি ॥
জনগুরুত্বপূর্ণ চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার টোরাগড় সেন্দ্রা পালিশারা ও বড়কুল ইউনিয়নের ফেরিঘাট বড়কুল পূর্ব এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর ওপর ব্রিজটির নির্মাণ কাজ ভূমি অধিগ্রহণ ও বিদ্যুৎ সংযোগ জটিলতায় নির্ধারিত সময় শেষ হয়নি। চলতি জুলাই মাসের ২০ তারিখে এই কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ৫০ ভাগ। আর বাকি কাজ শেষ করার জন্য আরো ১ বছর সময় বৃদ্ধি করা হলেও তা নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ব্রিজের দুই পাশের জমির মালিকদের মামলা আর নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়ায় জটিলতা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সাথে কৃষকদের আরো এক বছর ফসলি জমির ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) হাজীগঞ্জ উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম এমপি স্থানীয় লোকদের দাবির প্রেক্ষিতে তাদের স্বাক্ষর নিয়ে উল্লেখিত ব্রিজ নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করেন। প্রস্তাবটি অনুমোদন ও টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ২০১৭ সালের ১৪ মে ২৬৬.৩০ মিটার ব্রিজের ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন করা হয়। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২২ কোটি ৪৯ লাখ ৪৮ হাজার ১৪ টাকা। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুরমা-আরবিএল জেভি কাজ শুরু করলে শুরু হয় জটিলতা। প্রথমে বড়কুল ইউনিয়নের জমির মালিক পরবর্তীতে পৌর এলাকার সেন্দ্রা পালিশারা জমির মালিকরা কাজে বাঁধা প্রদান করেন। তারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিযুক্ত প্রকৌশলী আব্দুল আউয়ালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে সংসদ সদস্য জমির মালিকদের নিয়ে সুরাহা করার পর কাজ শুরু হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত জমির মালিকরা তাদের পাওনা বুঝে পায়নি।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুরমা-আরবিএল জেভি প্রকৌশলী (সাইট ইনচার্জ) আব্দুল আউয়াল জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ব্রিজ নির্মাণের জন্য নিস্কন্ট জমি চায়। নির্মাণ কাজ শুরু করলে প্রথমে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা এবং বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় ৪ মাস কাজ বন্ধ থাকে। তারপর বর্ষা মৌসুম হওয়ার কারণে ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পায়, এতে করে কাজ বন্ধ থাকে। যে কয়মাস সময় পেয়েছি তাতে ৫০ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দুই পাশের সড়কসহ বাকি কাজ সম্পন্ন করার জন্য আরো ১ বছর সময় লাগবে। কিন্তু জমির মালিকরা বাঁধা দিলে তাও করা সম্ভব হবে না।

পৌর এলাকার জমির মালিকদের মধ্যে মেন্দু মিয়া, শহীদ উল্যাহ ফকির ও মো. মোস্তফা জানান, তাদের বসতবাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ জমি ব্রিজের সড়কে পড়েছে। তাদের ক্ষতিপূরণ না দিলে পথে বসতে হবে। তাই তারা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। ক্ষতিপূরণ পেলে তাদের কোন আপত্তি থাকবে না।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. সুরুজ মিয়া জানান, ডাকাতিয়া নদীর এ স্থানে খেয়াঘাট ছিলো। উপজেলা সদরে চিকিৎসা, শিক্ষাসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য বড়কুল, গর্ন্ধব্যপুর দক্ষিণ, গর্ন্ধব্যপুর উত্তর ইউনিয়নসহ লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জের মানুষ খুবই দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা গর্ভবতী মায়েদের বিড়ম্বনার ছিলো সবচাইতে বেশি। এ ব্রিজটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতসহ এলাকার মানুষের জীবন যাত্রার মান আরো বাড়বে। তাই ব্রিজটি দ্রুত নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) চাঁদপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জিএম মুজিবুর রহমান জানান, ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা খুব শীঘ্রই শেষ হবে। জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য মৌজা মূল্যের ৩গুণ অতিরিক্ত টাকা দেয়া হবে। আর এ জন্য ১২ কোটি টাকার অনুমোদন পেয়েছি। এটি সমাধান হলে আগামী ১ বছরের মধ্যে ব্রিজ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।