শুক্রবার ২৯ gvP© ২০২৪
Space Advertisement
Space For advertisement
  • প্রচ্ছদ » sub lead 3 » ২৯ বছর আন্দোলন করে এখন কুমিল্লার ঐতিহ্য হারাতে বসেছি


২৯ বছর আন্দোলন করে এখন কুমিল্লার ঐতিহ্য হারাতে বসেছি


আমাদের কুমিল্লা .কম :
16.02.2017

মাসুদ আলম।।
৫ জানুয়ারি ১৯৮৯ সাল থেকে নিজের পকেটের অর্থ দিয়ে কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়নসহ ১৪টি দাবি জানিয়ে আসছি সরকারের কাছে। ১৪টি দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল কুমিল্লা বিভাগ চাই। যে বিভাগ ১৯৯০ সাথে হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয়নি। দেশ স্বাধীনের পর থেকে কুমিল্লা বহু ষড়যন্ত্রের মধ্যে ডুবে আছে। এখন আবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সম্মুখিন কুমিল্লা ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আপামর জনতা। যখন বিভাগের জন্য আন্দোলন শুরু করি, তখন আমাদেরকে নেতৃত্ব দেওয়ার মত কেউ ছিল না। বর্তমানে কুমিল্লার ভাল মানের অভিভাবক থাকার পরও তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হচ্ছে আমাদেরকে।
দীর্ঘ ২৯ বছর যাবত শ্রম, মেধা এবং পকেটের টাকা ব্যয় করে কি পেলাম, কিছুই না। আজ উল্টো সেই কুমিল্লার হাজার বছরের অর্জিত ইতিহাস, ঐতিহ্য পাথর চাপার পড়ার পথে বলে মনে করেন, কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়নের রূপকার ও কুমিল্লা গণদাবি পরিষদের সভাপতি এড. মোকলেছুর রহমান চৌধুরী।
১৯৬২ সাথে আয়ুব খান ত্রিপুরার রাজধানী ভেঙ্গে কুমিল্লা নামকরণ করে জেলার মর্যাদা দেন। আমার এখনো সঠিক মনে আছে ১৯৮৯ সালের ৫ জানুয়ারি বিকালে নগরীর ধর্মপুর আমার বাসা থেকে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবির সূত্রপাত হয়। আমাকে জনবল দিয়ে সহযোগিতা করতেন কুমিল্লা শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কাজী শারমিন আউয়াল পারভেজ বাপ্পি ও একজন ল’ কলেজের একজন ছাত্র। ওইদিন আমরা একটি মানববন্ধনও করি।
১৯৯০ সাথে বৃহত্তর কুমিল্লা গণদাবী পরিষদের আহবায়ক কাজী আলী হায়দার পরিষদের প্রথম সদস্য সচিব ছিলেন। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুমিল্লা রেল স্টেশনে আসলে, কুমিল্লার রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনকে নিয়ে গণদাবী পরিষদ ১৪টি দাবি জানায়। ঠিক ওই সময় তিনি বলেছেন, আমরা ক্ষমতায় আসলে কুমিল্লাকে বিভাগে রূপান্তর করবো। ঠিক ওই বছরে বিএনপির সভানেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে কুমিল্লা আসলে আমরা ১৪টি দাবি জানালে তিনিও কুমিল্লাকে বিভাগ করার অঙ্গিকার করেন। কারণ ১৪টি দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল কুমিল্লাকে বিভাগ বাস্তবায়ন চাই।
তারপর ১৯৯৩ সালের ২২ জুলাই কুমিল্লা গণফোরাম ৬টা জেলা মিলে কুমিল্লা টাইনহল মাঠে একটি সম্মেলন হয়। আমি ওই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করি। সঞ্চালনা করেন কুমিল্লা সদর আসনের এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। ওই দিন একটি কমিটি হয়। কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন পরিষদ। কমিটির আহবায়ক নির্বাচিত হন অধ্যাপক খোরশেদ আলম, যুগ্ম আহবায়ক করা হয় আমাকে এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি রাবেয়া চৌধুরীকে। সদস্য সচিব করা হয় এমপি বাহারকে। কোষাধ্যক্ষ করা হয় সাবেক এমপি আনছার আহম্মেদকে। ওই কমিটির পর কুমিল্লা বিভাগের দাবিতে আমরা ঢাকা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও অনশন করি।
এরপর আরেকটি উপ-কমিটিও গঠিত হয়। এমনকি টাউনহল ভবনের নিচ তলায় একটি অফিস নেয়া হয়। যার নাম ছিল কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন পরিষদ কার্যালয়। এমনকি ঢাকাও কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি গঠিত হয়। যার আহবায়ক করা হয়েছে সাবেক সচিব এটিএম সামছুল হককে। এমনকি বাহ্মণবাড়িয়া জেলা গণদাবি পরিষদের কমিটি করা হয়। ওই কমিটিতে জাতীয় পার্টির এমপি এড. জিয়াউল হক মৃধাকে আহবায়ক করা হয়। সেই এড. জিয়াউল হক মৃধা জাতীয় সংসদে বৃহত্তর কুমিল্লাকে বিভাগ বাস্তবায়নের জন্য দাবি জানান।
এ বিভাগের বাস্তবায়নের আশায় কত ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে, বলে শেষ করা যাবেনা। জনবল, অর্থ সময় বের করে নেওয়াটা কত যে কষ্টকর তা না করলে অনুভব করা যায় না। দীর্ঘ ২৯ বছর যাবত আন্দোলন করছে কুমিল্লার মানুষ বিভাগ নামকরণ হচ্ছে একটি ইউনিয়নের নামে। এটা আসলে দুঃখ জনক। তবুও আমি শ্রদ্ধার সাথে দাবি জানাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। আপনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ১৯৯০ সালে, এরপর ২০১৫ সালে যে, কুমিল্লার নামে বিভাগ হবে।