লাঞ্চের আগে তিন উইকেট। চা বিরতি পর্যন্ত আরো দুটি। স্কোর ৮ উইকেটে ৪৯২। তারপর রাব্বির খুনে বাউন্সারে আরেকজনের পতন। সেখান থেকে আরেকটি উইকেট নিতে নিতে ৫০০ পার হয়ে গেল। এক প্রান্তে দাঁত কামড়ে পড়ে থাকলেন স্যান্টনার। অন্যদিকে বোল্ট হাঁটুগেড়ে একের পর এক ডিফেন্স করে গেলেন। শেষ পর্যন্ত শুভাশিসের বলে যখন স্যান্টনার বোল্ড হলেন, তখন ৫৩৯ রান ছুঁয়েছে স্বাগতিকদের দলীয় সংগ্রহ।
চতুর্থ দিন শেষ বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাট করতে নামবে ৫৬ রানে এগিয়ে থেকে। রোমাঞ্চকর কিছু ঘটলেও ঘটতে পারে।
আজ দুপুর থেকে বেশ ভালোই বাউন্স পাচ্ছিলেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। তারই একটায় রক্তাক্ত হন ওয়াগনার। চা বিরতির আগেও রাব্বির বল ওয়াগনারের হেলমেটে লেগেছিল। সেবার কিছু না হলেও চা বিরতির পর থুতনিতে বল লেগে কেটে যায়। বেশ খানিকটা রক্ত ঝরে। ওয়াগনার নিজেকে সামলাতে পিচের ওপর বসে পড়েন। স্লিপ থেকে ছুটে আসেন মিরাজ। এরপর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তামিমও ছুটে যান। ততক্ষণে ফিজিও এসে রক্তপড়া বন্ধ করেন।
ওয়াগনার শেষ পর্যন্ত রাব্বির বাউন্সারেই আউট হন। পুল করতে যেয়ে দুর্বল শটে বল আকাশে উঠিয়ে দেন। হেসেখেলে তালুবন্দি করেন ইমরুল।
চতুর্থ দিন লাঞ্চের আগে ৩ উইকেট তুলে নেয় তাসকিনরা। এরপর দেয়াল হয়ে দাঁড়ান ওয়াটলিং এবং স্যান্টনার। এই দেয়াল ভেঙে জোড়া আঘাতে মঞ্চে আসেন রিয়াদ। এক ওভারে ওয়াটলিং এবং সাউদিকে সাজঘরে ফিরিয়ে ম্যাচে প্রাণ আনেন।
দারুণ ব্যাট করতে থাকা ওয়াটলিং (৪৯) লেগ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বলে আত্মঘাতী শট খেলতে যান। অনেকটা তাড়া করে প্যাডেলড সুইপ করতে যেয়ে বল লাগান গ্লাভসে। মুশফিকের বদলে কিপিং করতে নামা ইমরুল তা সহজেই তালুবন্দি করেন। তিন বল বাদে সাউদি এলবির ফাঁদে পড়েন।
তৃতীয় দিন তিন সেশনে একটি করে উইকেট তুলতে পেরেছিলেন তাসকিনরা। আজ ১২ ওভারের টানা স্পেলে দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নিকোলস ও ল্যাথামকে ফেরান সাকিব। ডি গ্র্যান্ডহোমকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম টেস্ট উইকেট নেন শুভাশীষ রায়।
সাকিব আল হাসানের বলে সুইপ করতে গিয়ে কয়েকবার কোনোমতে বেঁচে যান টম ল্যাথাম। তবে টানা প্রচেষ্টায় শেষ হাসি হাসেন বাঁহাতি স্পিনারই। সোজা বলে সুইপ মিস করে শেষ হয় ল্যাথামের দারুণ ইনিংসটি। ৩২৯ বলে ১৮টি চার ও একটি ছক্কায় ১৭৭ রান করে ফেরেন বাঁহাতি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।
অন্যদিকে নিজের ২১তম ওভারে প্রথম টেস্ট উইকেটের দেখা পান শুভাশিস। কামরুল ইসলামের জায়গায় নিজের নতুন স্পেলের প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন এই অভিষিক্ত পেসার।
রিয়াদের এক ওভারে ওয়াটলিং আর সাউদি ফিরে যাওয়ার পর স্যান্টনার এবং ওয়াগানার রান বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। এর ভেতর রাব্বির বলে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন স্যান্টনার। মিরাজের ঠিক হাতের সামনে বল পড়ে। এক ড্রপে বল হাতে নিলেও প্রখরতা দেখাতে পারেননি এই তরুণ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ, প্রথম ইনিংস: ৫৯৫: (তামিম ৫৬, ইমরুল ১, মুমিনুল ৬৪, রিয়াদ ২৬, সাকিব ২১৭, মুশফিক ১৫৯, মিরাজ ০, সাব্বির ৫৪*, রাব্বি ৬*; বোল্ট ২/১২১, সাউদি ২/১৪৪, ওয়াগনার ৪/১৫১।)
নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৩৯ (রাভাল ২৭, ল্যাথাম ১৭৭, উইলিয়ামসন ৫৩, টেলর ৪০, নিকোলস ৫৩, ওয়াটলিং ৪৯, স্যান্টনার ৭৩, বোল্ট ৪*; মিরাজ ০/১১৬, শুভাশীষ ২/৮৯, তাসকিন ১/১৪১, রাব্বি ২/৮৩, সাকিব ২/৭৮)।